গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বৃহষ্পতিবার সকাল থেকে কড়া নিরপাত্তায় ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে তৃতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ চলবে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে পুরো নগরী।
নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ, র্যা ব, বিজিবি, এপিবিএন ও আনসার ভিডিপি সদস্যসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ১৩ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। ভোট গ্রহণের জন্য গত বুধবার নির্বাচনী এলাকার ৪৮০টি ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে ইভিএম মেশিনসহ ৪৬ আইটেমের নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে পৌছেন। তারা আজ ভোরে কেন্দ্রের ভিতরে পোলিং বুথসহ অন্যান্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করা পর সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়।
নির্বাচনের বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেব নাথ, গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা।
রিটার্ণিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানান, এবারের নির্বাচনে ৪৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে কাশিমপুর থানায় ৪৭ টি, কোনাবাড়ি থানায় ৪৩টি, বাসন থানায় ৪২টি, সদর থানায় ৯৬টি, গাছা থানায় ৫৭টি, পূবাইল থানায় ৩২টি, , টঙ্গী পূর্ব থানায় ১১১টি ও টঙ্গী পশ্চিম থানায় ৫২টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এসব ভোটকেন্দ্রে ৩৫১টি গুরুত্বপূর্ণ এবং ১২৯টি কেন্দ্রকে সাধারণ কেন্দ্র হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে ৫৭টি ওয়ার্ডে ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রে ৩ হাজার ৪৯৭টি ভোট কক্ষ থাকবে। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৬৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৪৭ এবং নারী ভোটার ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৮, আর তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১৮ জন।
এছাড়াও নির্বাচনে ৪৮০ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৩ হাজার ৪৯৭ সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ৬ হাজার ৯৯৪ পোলিং অফিসারসহ ১০ হাজার ৯৭১ জন ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন।
সূত্র আরো জানায়, নির্বাচনে ৫৭ টি ওয়ার্ডে ৫৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট এবং অতিরিক্ত ১৯ জনসহ সর্বমোট ৭৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও র্যা বের ৩০ টি টিম এবং ২০ প্লাটুন বিজিবিসহ সর্বমোট প্রায় ১৩ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করছেন।
সূত্র আরো জানায়, প্রতিটি সাধারণ ভোট কেন্দ্রে একজন এসআই বা এসআইয়ের নেতৃত্বে ৩ কনস্টেবল থাকবে। এছাড়া অস্ত্রসহ অঙ্গীভূত ২ জন আনসার সদস্য, লাঠি হাতে (মহিলা ৪ জন ও পুরুষ ৬ জন) ১০ জন আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে।
প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ভোট কেন্দ্রে একজন এসআই বা এসআইয়ের নেতৃত্বে ৪ কনস্টেবল থাকবে। এছাড়া অস্ত্রসহ অঙ্গীভূত ২ জন আনসার সদস্য, লাঠি হাতে (মহিলা ৪ জন ও পুরুষ ৬ জন) ১০ জন আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে।
গাজীপুর মহানগরীর ৫৭ টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে একটি করে পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসার সমন্বয়ে পুলিশের ৫৭ টি মোবাইল ফোর্স থাকবে। এছাড়া গাজীপুর মহানগরীর ৮টি থানা এলাকায় ৮টি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স দায়িত্ব পালন করবে। প্রতি ৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে পুলিশের মোট ১৯টি স্ট্রাইকিং ফোর্স দায়িত্ব পালন করবে।
এছাড়াও প্রতি ২টি সাধারণ ওয়ার্ডে র্যা বের একটি করে মোট ৩০টি টীম নিরাপত্তার রক্ষায় নিয়োজিত থাকবে।
নগরীর প্রতি ৫টি সাধারণ ওয়ার্ডে এক প্লাটুন করে বিজিবি সদস্য মোতায়েন থাকবে।
প্রত্যেকটি কেন্দ্রের প্রতিটি ভোট কক্ষে পৃথক সিসি ক্যামেরা থাকবে। যা নির্বাচনে রিটানিক কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনের কমিশনারগণ সরাসরি প্রত্যক্ষ করবেন।
প্রার্থী সংক্রান্ত তথ্য :
জেলা নির্বাচন অফিসার ও গাসিক নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার এএইচএম কামরুল হাসান জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের এবারে নির্বাচনে ৮ মেয়র প্রার্থী, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৫ জন প্রার্থীসহ মোট ৩৩২ জন কাউন্সিলর (সাধারণ ও সংরক্ষিত) প্রার্থী সরাসরি ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। এ ছাড়া এ নির্বাচনে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ফয়সাল আহমেদ সরকার ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তাকে নিয়ে এবার নির্বাচনে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৩৩৩ জন।
তিনি আরো জানান, এ নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান, জাতীয় পার্টির প্রার্থী (লাঙ্গল প্রতীক) সাবেক সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির রাজু আহাম্মেদ, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এছাড়াও স্বতন্ত্র মেয়র পদে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন (সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা), ঘোড়া প্রতীকে হারুন-অর রশীদ ও হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম লড়ছেন।