সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪ , ২৯ আশ্বিন ১৪৩১

সেকশন

 

বেঈমানদের কারণে নৌকা হেরেছে

Asad
প্রকাশ: ২ জুন ২০২৩, ২১:১৪:৪০ | পঠিত: ১৬৯

---

গণবাণী ডট কম:

সদ্য সমাপ্ত গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতাকর্মীর বেঈমানীর কারণে দলীয় প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমেূলের নেতারা। শুক্রবার বিকালে অনুষ্ঠিত নির্বাচন পরবর্তী মূল্যায়ন সভা অংশ নিয়ে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ ও অংগ সংগঠনের নেতারা এমন অভিযোগ করেন।

গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বাসন থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজন করা হয় ওই নির্বাচন পরবর্তী মূল্যায়ন সভা। বিকাল ৩টায় শুরু হওয়া সভায় বাসন থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল বারির সভাপতিত্ব করেন। সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় প্রায় ৪ ঘন্টা স্থায়ী সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত পরাজিত প্রার্থী গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. আজমত উল্লা খান, আফজাল হোসেন সরকার, মহানগর যুবলীগের আহবায়ক কামরুল আহসান সরকার, মোকছেদ আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এতে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, ছাড়াও বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও অংগ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

সভায় অংশ নিয়ে ১৬ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা হাজী জয়নাল আবেদীন বলেন আমাদের বিভিন্ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সম্পাদক দলের বিরুদ্ধে বেইমানি করেছেন। তারা দলের পরিচয়ে গোপনে ঘড়ির নির্বাচন করেছেন। আমি তাদের ধিক্কার জানাই তারা নর্দমার কীট। তিনি দাবি করেন, দলের মধ্যে শুদ্ধি অভিযান প্রয়োজন। তিনি বলেন, যারা প্রকাশ্যে ঘড়ি নির্বাচন করেছে আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই, এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু যারা আমাদের দলের ব্যাজ গলায় ঝুলিয়ে গোপনে ঘড়ির কাজ করেছে তারা ভয়ঙ্কর। সামনে জাতীয় নির্বাচন তাই এসব দলের বেইমানদের বাদ দিয়ে প্রকৃত আওয়ামী লীগের নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে।

ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি দবির উদ্দিন বলেন, ১৬ নং ওয়ার্ডের বিগত সময়ের থেকেই ও প্রকৃত এবং সিনিয়র নেতাদেরকে কেন্দ্র কমিটিতে রাখা হয়নি। আমাকে নির্বাচনের আগের দিন সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অথচ সমন্বয় করে নির্বাচনের আরো আগে থেকে এখানে কাজ করলে আমাদের ফল আরো অনেক ভালো হতে পারতো। দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র নেতৃবৃন্দ তাদের কাজে গাফিলতি করেছেন।

কৃষক লীগ নেতা জহির উদ্দিন বলেন, সিটি কর্পোরেশনে মাস্টার রোলে বিভিন্ন ওয়ার্ডে সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তারা সরকারের বয়স্ক ভাতা বিধবা ভাতা সহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করেছে। সিটি কর্পোরেশনের ৭৬ জন সচিব বিগত সময়ে জাহাঙ্গীর আলম এর কাছ থেকে নানা রকম সহযোগিতা নিয়েছে তারা এই নির্বাচনে ঘড়ির পক্ষে কাজ করেছে। আমরা এসব বিষয়ে নজরদারি করতে পারিনি।

---

সভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, কারা কারা এই নির্বাচনে ডাবল রোল প্লে করেছে। তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। আমাদের দুই ভাবে বিচার করতে হবে। যারা দায়িত্বে অবহেলা করেছে আর যারা বলেছে একটা করেছে অন্যটা। আমরা যেহেতু দল করি তাই দলের একটা বিধিবিধান আছে, গঠন তন্ত্র আছে। সেই গঠনতান্ত্রিক ভাবেই আমরা আলোচনা করে দায়িত্বে যারা ছিলো তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা অপরাধ করেছে এবং আর যারা বেইমানি করেছে দুইটা একই অপরাধ না। তাই অপরাধের মাত্রা অনুসারে সাংগঠনিক ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্ত্রী বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ৩৫ লাখ লোক বসবাস করে। আমাদের পর পর তিনটা নির্বাচন হয়ে গেল। প্রথম নির্বাচন সেটা একটা দেশব্যাপী বিরাট ইস্যু হয়েছিল। আমাদের তখন প্রতিকুল অবস্থা ছিল। ২০১৩ সালে আমরা জিততে পারি নাই। যারা দায়িত্ব পেয়েছে তারা জনগেনের কাজ করতে পারেনি। ব্যর্থতা আর অভিযোগে, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে এই সমস্ত অভিযোগে অভিভাবকহীন ছিলো গাজীপুর সিটি করপোরেশন। পরে যাকে আমরা নির্বাচিত করলাম দলের মনোনিত প্রার্থী ছিলেন তিনি এমন কিছু কাজ করলেন দল তাকে অব্যাহতি দিয়ে দিলো এবং তাকে বরখাস্ত করা হলো। সরকারি অর্থ তার বিরুদ্ধে আত্নসাতের অভিযোগ রয়েছে। তিনি নিজেই বলেছিলেন প্রধান মন্ত্রী গাজীপুরে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছিলেন। সেই টাকার উন্নয়নের সুফল গাজীপুরবাসী পায়নি। এই দশ বছর যাবতই যে উন্নয়ন গাজীপুরবাসী পেত তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সরকারের একটা বিধান আছে সব সিটি করপোরেশনে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ থাকে। সেই উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কোথাও জনপ্রতিনিধি আছে কোথাও সরকারি কর্মচারী আছে। আজমত উল্লা খানের স্থানীয় সরকার পরিচালনায় ব্যাপক অভিজ্ঞতা আছে। যার এতো দক্ষতা যার এতো সততা আছে তাকে যদি গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয় তবে নগরীর বঞ্চিত ৩৫ লাখ লোকদের উন্নয়ন করতে পারবেন। এবার যিনি মেয়র হয়েছেন তিনি কেমন করবেন জানি না। মানুষের ধারনা তার যে যোগ্যতা তার যে অভিজ্ঞতা তাতে মানুষের যে প্রত্যাশা তা পুরন নাও হতে পারে।

আজমত উল্লা খান বলেছেন, নির্বাচনের আগে সবখানে আওয়ামী লীগ ছিল। যেখানে গিয়েছি, সেখানেই আওয়ামী লীগ। কিন্তু নির্বাচনের দিন দেখা গেল, অন্য চেহারা। তাই আমাদের এখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে। দলের কতিপয় লোকের কারণে আমাদের হার মানতে হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের এখন থেকেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। আমরা কে কি করলাম সেটি বড় কথা নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী না হতে পারেন। আমরা অনেক কিছু হয়েও লাভ কি হবে। ষড়যন্ত্র চলছে। ৭৫ এর আগে যেমন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়েছিল। এবারও আপনারা লক্ষ করতে পারছেন দেশে এবং বিদেশে সেই চক্র কাজ করছে। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। আমি আবারও বলি আমাকে আপনারা আরো দুঃখ দেন, আমার কোনো আপত্তি নেই। কষ্ট দেন, আপত্তি নাই। বুক চাপা কান্না করান আপত্তি নাই। পায়ে হাত দিয়ে বলি দয়া করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা বলে নেত্রীকে কোনো দুঃখ দিবেন না। ওনার মনে কোনো কষ্ট দিয়েন না। আমারটা করেছেন, বঙ্গবন্ধুর নাম করে যদি এটা করেন, নেত্রীকে যদি কষ্ট দেন আল্লাহ একজন আছেন, তিনি অবশ্যই আপনাদের উপরে গজব নাজিল করবেন। তাই শেখ হাসিনাকে কোনো কষ্ট বা দুঃখ দিবেন না।

তিনি বলেন, আবারও আমি নিবেদন করবো আপনাদের কাছে কোনো তথ্য থাকলে দয়া করে সেই তথ্যগুলি আমাকে দিবেন। কারণ বাকশাল হওয়ার পরে ৭৫ এর ২৫ জানুয়ারির পরে আমরা দেখেছি বাকশালের লোকছাড়া আর কোনো লোক বাংলাদেশে ছিল না। আমরা এই নির্বাচনেও দেখেছি আওয়ামী লীগ ও নৌকা ছাড়া কোনো লোক ছিল না। এটার পুনরাবৃত্তি যাতে সংসদ নির্বাচনে যাতে না হয় সেই জন্য লোক কম থাকলে সৎ সাচ্চা কর্মীদের নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এরমধ্যে আমি ওয়ার্ড পযায়ে একটি ট্যুর দিবো। আমার নির্বাচনের ও সাংগঠিক রিপোর্ট কেন্দ্রীয় অফিসে জামা দিয়ে ওয়ার্ড পযায়ে আমরা আবার ট্যুর শুরু করবো। ঈদের আগেই আগামী সংসদ নির্বাচনের একটি ক্ষেত্র আমরা প্রস্তুত করতে পারি।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon
শিরোনাম:   ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা সহায়তা দিলো জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন শেখ হাসিনাস জুলাই গণহত্যার ‘হুকুমদাতা’দের ফেরাতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইব : চিফ প্রসিকিউটর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ আওয়ামী লীগের সময়ে হওয়া হত্যাকাণ্ডের বিচার চায় জামায়াত হজে যেতে আগামী ২৩শে অক্টোবরের মধ্যে নিবন্ধন করতে হবে দখল-দূষণ রোধে করণীয় নির্ধারণে লবলং নদী পরিদর্শন করল জেলা প্রশাসন গাজীপুরে পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করলেন জেলা প্রশাসক দখল দূষণ রোধে করণীয় নির্ধারণে বালু নদী পরিদর্শন করল জেলা প্রশাসন গাজায় ৯০২টি পরিবারের কেউই বেঁচে নেই, নিহতদের নাম প্রকাশ দুর্নীতিবাজদের দৃশ্যমান শাস্তি না হলে দুর্নীতি বন্ধ হবে না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য