নিজস্ব প্রতিবেদক, কাপাসিয়া (গাজীপুর):
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এই দায়িত্বটা আমি নিয়েছিলাম অনেক আশা নিয়ে। এই যে আমাদের সোনার বাংলাদেশ, এই সোনার বাংলাদেশ পেতে অনেক আত্মত্যাগ করতে হয়েছে। এই সোনার বাংলার স্বপ্ন ছিল যে, দেশের সকল ধর্মের মানুষ শান্তিতে বসবাস করবে। গরিব ধনী সবার সমান অধিকার থাকবে এবং শিক্ষার অধিকার থাকবে। শিক্ষিত হতে পারলে জ্ঞান অর্জন হবে। আমরা নিজেদের ভালো মানুষ হিসেবে তৈরি করতে পারব। সবাই যেন স্বাস্থ্য সেবা পায়। কথাগুলো বলছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ।
তিনি শনিবার দুপুরে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়নের লতাপাতা বাজারে তাজউদ্দীন আহমদ এন্ড সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের আয়োজনে বই পড়া কর্মসূচির পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ৫০ বছর হয়েছে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। এই সোনার বাংলা পেতে আমাদের অনেক আত্মত্যাগ করতে হয়েছে। এবং এই বাংলাদেশকে ও মুক্তিযুদ্ধকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এই কাপাসিয়ার সন্তান। তাঁর নাম তাজউদ্দীন আহমদ। এই তাজউদ্দীন আহমদকে যখন হত্যা করা হয়েছিল ১৯৭৫ সালে জেল হাজতে। তখন আমার বয়স ছিল পাঁচ বছর। পাঁচ বছর বয়সে আমি আমার পিতাকে হারিয়েছি। আমার পিতা আমাকে শিক্ষা দিয়েছে, দেশকে ভালোবাসার জন্য, দেশের মানুষকে ভালবাসার জন্য। তিনি আমাকে বলেছিলেন, এই দেশের জন্য অনেক মানুষ জীবন দিয়েছে এবং তাদেরকে সম্মান করতে হবে। কিভাবে সম্মান করতে হবে এই দেশটাকে একটি সুন্দর দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। গড়ে তুলতে পারলে তাদের প্রতি সম্মান দেখানো হবে। মানুষের কষ্ট আমাদের বুঝতে হবে সেই তাজউদ্দীন আহমদকে আমি যতটুকু জেনেছি, তার বাইরেও জানার আগ্রহ ছিল। এবং তা খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল বইয়ের পাতায়। জানতে পেরেছি তিনি একজন নির্লোভ মানুষ ছিলেন। উনার আদর্শ ছিল এই দেশকে দেশের মানুষকে স্বাধীন করার জন্য এদেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য। আমরা আমরা তার জীবনী পড়ে শিক্ষা নেব যে, ধন দৌলত প্রতিপত্তি থেকে সবচেয়ে বড় সম্মান হচ্ছে সততা এবং আত্মবিশ্বাস। সততা এবং আত্মবিশ্বাস থাকলে তাজউদ্দীন আহমদের মত নয় মাস যুদ্ধ করে আমাদের দেশের জন্য স্বাধীনতার পতাকা ছিনিয়ে এনেছিলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তাজউদ্দীন আহমদ এন্ড সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও গাজীপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি।
সিমিন হোসেন রিমি বলেন, নিজেদের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। বই যত বেশি পড়বে তত বেশি চিন্তা করার শক্তি অর্জন হবে। আমাদের ভালো মানুষ তৈরি করতে হবে। আর ভালো মানুষ তৈরি করতে পারে বই। মানুষের জন্য প্রেম থাকা লাগবে। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, পৃথিবীতে অশুভ মানুষের দখল থেকে মুক্ত করার অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে বই। বই মানে আলো। বই পড়লে জ্ঞান অর্জন করা যায়। জ্ঞান অর্জন করতে পারলে সমাজ রাষ্ট্রসহ সব জায়গায় আলোকিত মানুষ হওয়া সম্ভব। বই মানুষের জীবনকে সুন্দর করে। বই মানুষকে আলোকিত করে।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের বই পড়া কর্মসূচির বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় উপজেলার ১১ টি ইউনিয়ন থেকে ২৪ হাজার ৫০০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এদের মধ্য থেকে ৫৫০ জন বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কৃত করা হয়।
ফাউন্ডেশনের সংগঠক পারভেজ আহমেদ পাপেলের উপস্থাপনায় অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম গোলাম মোরশেদ খান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রওশন আরা সরকার, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম, কাপাসিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবীর প্রমুখ।