গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে জমিতে আগাছা ফেলার প্রতিবাদ করায় কলেজ শিক্ষক বড় ভাইকে পিটিয়ে মারল ছোট ভাই। খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
রোববার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার শ্রীফলতলী ইউনিয়নের সাজনধারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ভাই পলাতক রয়েছেন।
নিহত হলেন, রেজা সাঈদ আল মামুন (৫৫)। তিনি কালিয়াকৈর উপজেলার সাজনধারা গ্রামের আফাজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কলেজ শিক্ষক রেজা সাইদ আল মামুনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তার ভাইদের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। রোববার তিনি কলেজ থেকে ফিরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার বাজেবলিয়াদী এলাকায় বংশাই নদীর ধারে নিজের ফসলি জমি দেখতে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান তার ছোট ভাই নিজের জমির আগাছা পরিস্কার করে ঐ শিক্ষকের জমিতে ফেলেছেন। এটি দেখে শিক্ষক ভাই ছোট ভাইকে দেখিয়ে জানতে চান কাজটা ঠিক করেছ? পরে শিক্ষক ভাই নিজেই জমিতে ফেলা আগাছা পরিস্কার করার সময় ছোট ভাই মজিবুর ঐ শিক্ষককে এলোপাথারী পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। আহত অবস্থায় তিনি বাড়ী ফিরে গিয়ে অসুস্থ বোধ করলে পরিবারের সদস্যরা তাকে গাজীপুর মহানগরীর কাশিমুপর থানাধীন জিরানী এলাকায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজে নিয়ে যান। সেখানে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক রেজা সাইদ আল মামুনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ঘাতক ভাই মজিবর রহমান পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
তবে, নিহতের স্বজনেরা অভিযোগ করেন,দুই ভাইয়ের মধ্যে আগে থেকেই জমি নিয়ে বিরোধর চলে আসছিল। রোববার বিকালে জমিতে কথা কাটাকাটির এক পর্ায়ে মজিবুর, তার ছেলে সুমন ও সেজান ঐ শিক্ষককে মারধর করেছেন।
নিহতের মেয়ে সুমাইয়া শাহরিন সাংবাদিকদের বলেন, আমার বাবা বাড়ির পাশের জমিতে কাজ করতে গেলে পিছন দিক থেকে হঠাৎ চাচা মজিবুর ও চাচাতো ভাই সুমন ও সেজান মারধোর করে হত্যা করে ফেলে রাখে। তারা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আমার বাবাকে হত্যা করেছে। এর আগেও কয়েকবার আমার বাবাকে তারা মেরেছে।
নিহতের শ্যালক আল মামুন সাংবাদিকদের জানান, তার বোন জামাই ভাইদের নির্যাতনের কারনে দীর্ঘদিন কালিয়াকৈর উপজেলার লতিফপুর এলাকায় বাসা নিয়ে ভাড়া থাকতেন। গত দুই বছর আগে তিনি আবার গ্রামের বাড়িতে চলে যান। সেখানে যাওয়ার পর ভাইদের সঙ্গে জমিজমা দিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
এ বিষয়ে কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম বলেন, নিহত বড় ভাই রোববার বিকালে জমিতে গিয়ে দেখতে পান ছোট ভাই জমির আগাছা পরিস্কার করে তার জমিতে ফেলেছে। এ নিয়ে বড় ছোট ভাইকে কাজটি ভালো করনি জানিয়ে নিজেই পাগাছা পরিস্কার করতে যান। এসময় ছোট ভাই মজিবুর লাঠি দিয়ে বড় ভাইকে এলোপাথারি আঘাত করেন। পরে আহত বড় ভাই বাড়ীতে ফিরে অসুস্থ বোধ করলে তাকে হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু হয়। নিহতের স্বজনদের এ বিষয়ে এজাহার দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। অভিযুক্ত ভাইকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।