গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়িতে নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর বুধবার সকালে পুরো শরীরে কসটেপ প্যাচানো বস্তাবন্দি অবস্থায় তিন বছর বয়সী এক কন্যাশিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে লাশ ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপডাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, শিশুটিকে গত মঙ্গলবার তুলে নিয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুই কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বুধবার বিকালে আাদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন জিএমপির কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেএম আশরাফ উদ্দিন।
নিহত শিশুটি তার বড় বোন (৭) ও পিতা মাতার সাথে মহানগরীর কোনাবাড়ী থানাধীন বাইমাইল এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতো। তাদের গ্রামের বাড়ী কুড়িগ্রাম জেলার সদর থানা এলাকায়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট থানার চকরাইহাট এলাকার সফিকুল ইসলামের ছেলে সাজেদুল ইসলাম (১৬) এবং একই এলাকার শাহাজাহানের ছেলে নীরব (১৭)। তারা উভয়ে পিতা মাতার কোনাবাড়ী থানাধীন বাইমাইল মধ্যপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকে। তাদের পিতা শ্রমিক।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, আদরের দুই মেয়েকে সাথে নিয়ে তাদের পিতা মাতা কোনাবাড়ী থানাধীন বাইমাইল মধ্যপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। দুই বোনের মধ্যে নিহত শিশুটি ছিল ছোট। গত মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল থেকে শিশুটিকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছিলো না তার পরিবার। সন্ধ্যায় শিশুটির বাবা কোনাবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। বুধবার সকালে তাদের ভাড়া বাসার পাশে স্থানীয় রমিজের বাড়ির গলিতে পুরো শরীরে কসটেপ পেচানো বস্তাবন্ধি অবস্থায় শিশুটির লাশ দেখতে পায় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে তার পরিবারের সদস্যরা ও পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। মেয়ের লাশ দেখে কান্নায় ভেঙ্গেড় পড়ে শিশুটির পিতা মাতা। ছোট্ট মেয়েকে হারিয়ে তারা পাগল প্রায়। শোকে তারা মাটিতে গড়াগড়ি করে ও বুক চাপরিয়ে কান্নাকাটি করতে থাকেন। তাদের আহাজারিতে আশেপাশের পরিবেশ ভাড়ি হয়ে ওঠে।
পুলিশ জানায়, সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর সময় শিশুটিকে ধর্ষণ ও স্বাসরোধে হত্যার আলামত পাওয়া যায়। পরে এঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একই বাসার অন্য দুই ভাড়াটিয়ার বখাটে ছেলে সাজেদুল ও নীরবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিগ্যাসাবাদের তারা ওই শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
নিহত শিশুটির নানা ওবায়দুর রহমান জানান, গ্রেফতার দুই নরপশু আমার নিষ্পাপ নাতিনিটাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে মুখে কস্টেপ পেঁচিয়ে বস্তুাবন্ধী করে ওই বাসার গলির ভিতর ফেলে রাখে। তিনি বলেন, আমার নাতিনিকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তাদের যেন ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু কার্যকর করা হয়। তাহলেই আমি নাতনির আত্মা শান্তি পাবে।
স্থানীয় কাউন্সিলর মোঃ আব্বাসউদ্দীন খোকন বলেন, গত মঙ্গলবার সকালে ওই শিশুটি নিখোঁজ হয়। আজ সকালে জানতে পারি শিশুটির বস্তাবন্ধী লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকার ভিতরে এমন ঘটনা খুবই দুঃখজনক।
কোনাবাড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম আশরাফ উদ্দিন বলেন, এঘটনায় দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রথমে সাজেদুলকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নীরবকে গ্রেফতার করা হয়। তারা প্রাথমিক জিগ্যাসাবাদে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেছে। এ সংক্রান্তে শিশুটির পিতা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নিযাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে।
মন্তব্য