গণবাণী ডট কম:
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি বলেছেন, অপরাধীরা যে দলেরই হোক না কেন সে খুনি, আমাদের দলের হলেও তার পরিচয় সে খুনি।
মন্ত্রী সোমবার দুপুরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনের বাইরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দ্বন্ধের কারণে নিহত ছাত্রলীগ নেতা আল আমিনের হত্যাকারীদের বিচারের দাবী জানাতে আসা এলাকাবাসী ও তার স্বজনদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন।
সোমবার সকালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক তার নিজের নির্বাচনী এলাকা কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে চেক হস্তান্তর ও সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠান শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় দুপুরে মিলনায়তনের বাইরে অবস্থানরত নিহত কলেজ ছাত্র আল আমিন হোসাইনের স্বজন ও এলাকাবাসী মন্ত্রীর নিকট হত্যার বিচার দাবী করেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত আমিন হোসাইনের দাদি মরহজান ও বাবা মোতালেব মিয়া কান্নায় ভেঙে পড়েন ও মন্ত্রীর পায়ের কাছে বসে পড়েন। পরে মন্ত্রী তাদের সান্তনা দেন এবং বিচারের আশ্বাস দেন।
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আরো বলেন, সরকার পুলিশ বাহিনীর সাবেক প্রধানের অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান যাঁরা অন্যায় করেছেন, অপকর্ম করেছেন, বেআইনি কাজ করেছেন, তাঁরা ছাড় পাইনি; ভবিষ্যতেও কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। কালিয়াকৈরের ঘটনাও প্রধানমন্ত্রী জানেন। তিনি ভারত সফরে যাওয়ার আগে আমার সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি পুলিশ প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছেন, যে কোনো মূল্যেই হোক আল আমিনের হত্যাকারীদের যেন খুঁজে বের করে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়।
এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও নির্মমভাবে ছাত্রলীগ নামধারী কিছু নেতা-কর্মী আল আমিন হোসাইনকে হত্যা করেছে। সেটা আমরা সরেজমিনে না দেখলেও সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজেই মাধ্যমে দেশবাসী দেখেছে এবং সিসি ক্যামেরাই সেগুলো ধরা পড়েছে। তাঁকে কে মেরেছে, এটা খুঁজে বের করার জন্য আর কোনো কষ্ট করতে হবে না। সব তথ্য প্রমাণ প্রশাসনের এবং সর্বস্তরের কাছেই আছে। অপরাধীরা যে দলেরই হোক, আমি এর নিন্দা করি এবং তাদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি দেশের মানুষ দেখতে পারে সেই কামনা করছি।
তিনি বলেন, ঘটনার পরে তাদের তাৎক্ষণিকভাবে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের সাথে আমাদের দলের কারো কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের কাজকে আমরা ঘৃণা করি, নিন্দা করি। প্রশাসনকে আগেও বলা আছে, আজকেও বলতে চাই, তারা যেহেতু দেশের অভ্যন্তরে রয়েছে, তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করবে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান সেলিম আজাদ, কালিয়াকৈর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা কাউসার আহম্মেদ, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজের র্যা গ ডে উদ্যাপনকে কেন্দ্র করে কালিয়াকৈরে পৌর ছাত্রলীগ ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের দ্বন্ধের জেরে তাঁকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত আল আমিন হোসাইন (১৯) কালিয়াকৈর উপজেলার বরিয়াবহ গ্রামের মোতালেব মিয়ার ছেলে। তিনি উপজেলার চন্দ্রায় অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণী শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।
এ ঘটনায় পৌর ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ১৮ নেতা-কর্মীকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন মোতালেব মিয়া। পরের দিন পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামি মিলন রহমানকে গ্রেফতার করেছে। মিলন রহমান কালিয়াকৈর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
মন্তব্য