শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫ , ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

সেকশন

 

বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা হয়েছে : শেখ হাসিনা

গণবাণী ডট কম
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৪, ২০:৩৪:১৪ | পঠিত: ১০২

---

গণবাণী ডট কম:

বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য, যা আমরা প্রমাণ করেছি। তিনি আরো বলেন, বাঙালির সকল অর্জনেই ওতপ্রোতভাবে জড়িত আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশের মানুষের যতটুকু অর্জন তা আওয়ামী লীগের দ্বারাই হয়েছে।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, আওয়ামী লীগের পদক্ষেপের কারণেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সব সময় মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে ছিল সংগঠনটি। কিন্তু বারবার এই দলকে আঘাত করা হয়েছে, নিশ্চিহ্নের চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু যতবার এই আঘাত এসেছে, ততবারই দলটি ফিনিক্স পাখির মত জেগে উঠেছে।

আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দানকালে জনগণকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়ে এসব কথা বলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

তিনি বলেন, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার দেড় বছরের মাথায় ১৯৪৯ সালের আজকের দিনে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে আওয়ামী মুসলিম লীগ। ছয় বছর পর দলের নাম পাল্টে করা হয় আওয়ামী লীগ। প্রতিষ্ঠার পর ৫০ এর দশকেই বাঙালির অধিকার আদায়ের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠে দলটি। পরে ৬০ এর দশকে নানা ঘটনাপ্রবাহ শেষে ১৯৭১ সালে তাদের নেতৃত্বেই হয় মুক্তিযুদ্ধ, আত্মপ্রকাশ হয় স্বাধীন বাংলাদেশের।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এবার তিন দিনের আয়োজন রাখে আওয়ামী লীগ, যার সবশেষ ছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এই জনসভা। এর প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয় ‘গৌরবময় পথ চলার ৭৫ বছরে আওয়ামী লীগ, সংগ্রাম সংকল্প সতত শপথে জনগণের সাথে।’

বিকালে জনসভা শুরু হলেও সকাল ১১টার দিকেই উদ্যানের ফটকগুলো খুলে দেওয়া হয়। এরপর থেকে মূল দল ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উদ্যানে জড়ো হতে শুরু করেন।

বিকাল সাড়ে ৩টার পর পর সমাবেশ স্থলে এসে পৌঁছান বঙ্গবন্ধু কন্যা। মঞ্চে উঠার পূর্ব মুহূর্তে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন তিনি; দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পায়রা উড়ান শেখ হাসিনা। পৌনে ৪টার দিকে মঞ্চে বসেন তিনি।

এরপর মঞ্চের ডান পাশে নির্ধারিত স্থানে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর থিম সং এবং দেশাত্মবোধক নানা গান ও নাচ পরিবেশন করেন। পরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ওবায়দুল কাদের। সভাপতির বক্তব্য দিতে শেখ হাসিনা যখন মাইকের সামনে দাঁড়ান, তখন পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান স্লোগানে মুখর হয়ে উঠে। এসময় শেখ হাসিনা নিজেও স্লোগান ধরেন।

সভা মঞ্চ থেকে সামনের দিকে প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মী বসার ব্যবস্থা থাকলেও পুরো উদ্যান ঘিরেই ছিল নেতাকর্মী। অনুষ্ঠানে দেশি, বিদেশি আমন্ত্রিত অতিথিরাও অংশ নেন।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘সবুজ ধরিত্রী’ নামে দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিও হাতে নিয়েছে আওয়ামী লীগ।

শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যাত্রা শুরু, পাকিস্তান আমলের সংগ্রাম, স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা, দল ভাঙার চক্রান্ত, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ঐক্যের বিষয়টি তুলে ধরেন।

আওয়ামী লীগের দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদেরকেও স্মরণ করেন জাতির পিতার কন্যা। দলের প্রথম সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও সাধারণ সম্পাদক শামসুল হকের কথা উল্লেখ করে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। আওয়ামী লীগই সংগ্রাম আর ত্যাগের মধ্য দিয়ে দিয়ে জাতির সব অর্জন এনেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “বারবার এই দলের প্রতি আঘাত এসেছে, বারবার এই দলকে খণ্ডবিখণ্ড করার চেষ্টা হয়েছে, বারবার দলকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আইয়ুব খান থেকে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, বারবার এইভাবে আঘাত এসেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ গণমানুষের সংগঠন। তাই বারবার আঘাত এসেও আওয়ামী লীগের ক্ষতি করতে পারেনি।

---

জাতির পিতার কন্যা শোকাতুর ১৯৭৫ এর ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরের ইতিহাসও তুলে ধরেন। তিনি বলেন “এরপর ক্ষমতা পরিবর্তন হয় হয় অস্ত্রের মাধ্যমে বা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ছিল না। জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন তারা করতে পারেনি।

আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলেন,আওয়ামী লীগ ছাড়া যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা সন্ত্রাসবাদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি, দুর্নীতি করেছে। তারা জনগণের শক্তি ভুলে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগ জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, “আওয়ামী লীগ জনগণের আর্থসামাজিক উন্নতি করার সংগঠন। বারবার আঘাত করেও এই সংগঠনের কোনো ক্ষতি করতে পারে নাই। ফিনিক্স পাখি যেমন পুড়িয়ে ফেলা ভস্ম থেকে জেগে উঠে, আওয়ামী লীগ ঠিক সেইভাবে জেগে উঠেছে।

স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, বেশিদিনের কথা না, ২০০৭ সালেও চেষ্টা করা হয়েছিল; আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে নতুন কিংস পাটি গড়ে তুলবে, সেটাও সফল করতে পারেনি। কারণ, আওয়ামী লীগের মূল শক্তি হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ, তৃণমূলের মানুষ, আওয়ামী লীগের অগণিত মুজিব আদর্শের সৈনিক। এই সৈনিকরা কখনো পরাজয় মানে না, মাথা নথ করে না।

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের শক্তি হচ্ছে এ দেশের তৃণমূলের জনগণ এবং দলের নেতাকর্মীরা। কেউ মনে করেছেন আওয়ামী লীগে থাকলে তারাই হয়ত বড় নেতা। দলের থেকে নিজেকে বড় মনে করে কেউ দল ছেড়ে গিয়ে অন্য দল করেছেন, কেউ দল গঠন করেছেন, তারা ভুল করেছেন।

তিনি আরো বলেন, ভুলে গিয়েছিলেন, তারা আলোকিত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ছিলেন বলেই। চলে যাওয়ার পর ওই তারা আর জ্বলেন নাই। তারা আস্তে আস্তে নিভু নিভু, কেউ কেউ নিভে গেছে। কেউ ভুল বুঝে ফিরে এসেছে, আমরা নিয়েছি। কেউ এখনো আওয়ামী লীগের সরকার পতন, ধ্বংস, নানা জল্পনা কল্পনা করে যাচ্ছে।

মঞ্চে আওয়ামী আরো উপস্থিত ছিলেন, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোশাররফ হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, সিমিন হোসেন রিমি, এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, সৈয়দা জেবুন্নেছা হক।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon
শিরোনাম:   ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে গাজীপুরে বিএনপির মৌন মিছিল গাজীপুরে কাভার্ড ভ্যান ও সিএনজির সংঘর্ষে চার জন নিহত গাজীপুরে অবৈধ মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, ৩ জনের দন্ড, সিলগালা সারাদেশে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভের ডাক এনসিপির গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা, নিহত ৪, কারফিউ আজ ‘জুলাই শহীদ দিবস’, রাষ্ট্রীয় শোক শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া তথ্য-দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে এক কালো অধ্যায় গাজীপুরে অবৈধ কারখানায় টাস্কফোর্সের অভিযান, ৩ হাজার কেজি পলিথিন জব্দ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য বৃহস্পতিবারের পরীক্ষা স্থগিত টঙ্গীতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল কলেজছাত্রের