আন্দোলনকারীদের উপর সরাসরি গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। রোববার সকালে শুনানি শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের দ্বৈত বেঞ্চ এই আবেদন খারিজ করে দেন।
দেশের প্রচলিত আইনে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে বলেই আদালত রিটটি খারিজ করে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। আন্দোলনকারীদের কেউ আইন ভঙ্গ করলে সংবিধান ও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, রিট খারিজ করলেও পুলিশ যেন বেআইনিভাবে আন্দোলনকারীদের উপর গুলি না চালায়, আদালত সেবিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী।
এটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন গমাধ্যমকে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের দুইজন আইনজীবী এই রিট পিটিশন দায়ের করেছিলেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় জন সমন্বয়ককে নিরাপত্তার স্বার্থে ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়েছিল এবং তাদের ছেড়েও দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আদেশে হাইকোর্ট কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছে, আইন ও সংবিধান অনুযায়ী সভা সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে করার অধিকার রয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে সভা সমাবেশ করতে পারবে। যদি কোন সভা সমাবেশ থেকে সহিংসতা উশৃঙ্খলতা অরাজকতা হয় সে ক্ষেত্রে পুলিশ ফৌজদারী কার্যবিধি ও পুলিশ প্রবিধানমালা বেঙ্গলের (পিআরবি) সংশ্লিষ্ট বিধান অনুসরণ করে পদক্ষেপ নিতে পারবেন।
রিট পিটিশনের পক্ষে আইনজীবী অনীক আর হক সাংবাদিকদের বলেন, পর্যবেক্ষণ দিয়ে রিটটি খারিজ করে আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, গণতান্ত্রিক দেশে সভা সমাবেশ করা সংবিধানিক অধিকার। সমাবেশে বিষয়ে দায়িত্ব পালনে রুল অনুসরণ করবে পুলিশ। আইনের বাইরে গিয়ে কিছু করতে পারবে না পুলিশ।
দেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাইভ রাউন্ড বা তাজা গুলি ব্যবহার না করার নির্দেশনা চেয়ে গত ২৯শে জুলাই রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী মানজুর আল মতিন এবং আইনুন্নাহার সিদ্দিকা।
রিটে আইনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিচালক, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানকে বিবাদী করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সহিংস হয়। এতে এ পর্যন্ত দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়। যদিও সরকারি তথ্য বলছে, নিহতের সংখ্যা ১৫০ জন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন, এডভোকেট জেড আই খান পান পান্না, ব্যারিস্টার অনীক আর হক, এডভোকেট মানজুর আল মতিন প্রীতম।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরসেদ ও অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মেহেদী হাছান চৌধুরী।
মন্তব্য