গণবাণী ডট কম:
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে সারাবিশ্বের বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ১৪ হাজারের বেশি। এতে মারা গেছে ৪ হাজার ২শ জন। সেই সঙ্গে সুস্থ হয়েছে উঠেছেন ৬৪ হাজার।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম এই ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। চীনের বাইরে ইতালি, ইরান দক্ষিণ কোরিয়ায় ইতিমধ্যে এই ভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
চীনে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আবারো বেড়েছে। দেশটিতে মঙ্গলবার প্রাণঘাতী ভাইরাসে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ জন। যা এর আগের দিনের চেয়ে প্রায় পাঁচজন বেশি।বুধবার চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের পক্ষ থেকে এমনটি বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে চীনের বাইরে থেকে আসা ১০ জন রয়েছেন। চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে ছয়জন নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদিকে করোনা ভাইরাসে উৎপত্তিস্থল হিসেবে পরিচিত চীনের হুবেই প্রদেশে আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। মঙ্গলবার উহানে নতুন করে মাত্র ১৩ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা ভাইরাসে পুরো চীনের মূল ভূখণ্ডে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৭শ৭৮ জন।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে চীনের বাইরে ইতালিতে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। ইতালিতে ২৪ ঘণ্টায় ১৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ৬৩১ জনে দাঁড়ালো।
সোমবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইউসেপ্পে কোন্তে ৬ কোটি মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন এবং জরুরি ভ্রমণের ক্ষেত্রেও অনুমোদন নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি বলেন, হাতে আর সময় নেই। ইতালির স্বার্থে আমাদের সবাইকেই কিছু না কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। পুরো ইতালি একটি সংরক্ষিত এলাকায় পরিণত হবে। আর এটা এখনই করতে হবে।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ টি রাজ্যে হানা দিয়েছে। সেইসঙ্গে মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশটিতে মৃত বেড়ে ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে। এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রে করোনা রোগী শুন্যে নামবে। কিন্তু দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়ালো।
এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, ১৫ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং এই সংখ্যা কয়েক দিনের মধ্যে শূন্যে নেমে আসবে। এটি একটি দুর্দান্ত কাজ যা আমরা করেছি। দেশটির ওয়াশিংটন, ক্যালিফোর্নিয়া ও নিউ ইয়র্ক রাজ্যে করোনার ভয়াবহতা বেশি। বুধবার ওয়াশিংটনের গভর্নর রাজ্যটিতে সভা ও ২৫০ জন উপস্থিত হতে পারে এমন অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করেছেন।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং কনজারভেটিভ দলের সংসদ সদস্য নাডাইন ডরিস। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্যদের মধ্যে নাডাইন ডরিস প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। নাডাইন ডরিস জানায়, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের সকল পরামর্শ তিনি অনুসরণ করছেন এবং নিজেই সেল্ফ-আইসোলেশনে (বিচ্ছিন্নভাবে বসবাস) আছেন। যুক্তরাজ্যে করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে যুক্তরাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ৩শ৮২জন।