গণবাণী ডট কম:
প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের সংক্রমন প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা ও ঘোষিত লকডাউনের অমান্য করে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বিনা প্রয়োজনে অহেতুক ঘরের বাইরে এসে ঘোরাঘুরি ও সামাজিক দুরত্ব না মানার অপরাধে গত ৩দিনে ৪৬ জনকে ৪৫ হাজার ৮৫০ টাকা জরিমানা করে তা আদায় করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। গাজীপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
গাজীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকি মোকাবেলায় ও জরুরী সুরক্ষার প্রয়োজনে গত ১১ এপ্রিল গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গাজীপুর জেলাকে লকডাউন (অবরুদ্ধ) ঘোষণা করা হয়। এছাড়া লক ডাউনের পূর্বেই সরকারিভাবেও ঘরে থাকাসহ করোনা প্রতিরোধে বিভিন্ন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। কিন্তু লকডাউন চলাকালে সরকিারি নির্দেশনা এবং লকডাউনের ঘোষণাকে উপেক্ষা করে জেলার বিভিন্ন এলাকায় কিছু লোকজন বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে অহেতুক ঘুরাফেরা করছে। এসময় সামাজিক দুরত্বও বঝায় রাখা হয় না। ঘরের বাইরে অহেতুক ঘুরাফেরা বন্ধ করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে।
এ লক্ষ্যে ১৭, ১৮ ও ১৯ এপ্রিল গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া ও শ্রীপুর উপজেলা, গাজীপুর মহানগরের টঙ্গীর বিসিক, চেরাগআলী, হাড়িনাল, সাইনবোর্ড, বোর্ডবাজার এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায় একাধিক ভ্রাম্যমান আদালত। অভিযান পরিচালনাকালে গত তিনদিনে ৪৬ জনের বিরুদ্ধে এসকল দন্ড ক্ষেত্রভেদে দন্ড বিধি, ১৮৬০ ও সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ মোতাবেক প্রদান করা হয়। এসময় ৪৬ হাজার ৪৫০ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
এসব মামলার মধ্যে ১৯ এপ্রিল ৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। এসকল অভিযানে মোট ১৯টি মামলায় ১০ হাজার ৯৫০ টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।
১৮ এপ্রিল সরকারি আদেশ অমান্য করে বিনা প্রয়োজনে বাইরে চলাচল ও নির্ধারিত সময়ের পরে ফার্মেসী ব্যতীত অন্য দোকান খোলা রাখার জন্য কাপাসিয়া উপজেলায় ৮ জনকে অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।
১৭ এপ্রিল ৬জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান পরিচালনা করেন। এসকল অভিযানে মোট ৯টি মামলায় ১৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।
এসব ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন, কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোসা: ইসমত আরা, গাজীপুরের সিনিয়র সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাফিজা জেসমিন, গাজীপুরের সিনিয়র সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নীলিমা রায়হান, গাজীপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সামসুল আরেফীন, কালিয়াকৈর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আদনান চৌধুরী, শ্রীপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবা ফারজানা নাসরিন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াসিউজ্জামান চৌধূরী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর ফরহাদ শামীম। এসকল অভিযানে জেলা ও মহানগর পুলিশ েএবং সেনা বাহিনী সহায়তা করে।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকি মোকাবেলায় ও জরুরী সুরক্ষার প্রয়োজনে গত ১১ এপ্রিল গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গাজীপুর জেলাকে লকডাউন (অবরুদ্ধ) ঘোষণা করা হয়। কিন্তু লকডাউন চলাকালে উক্ত ঘোষণাকে উপেক্ষা করে কিছু লোকজন বাইরে অহেতুক ঘুরাফেরা করছে। অহেতুক ঘুরাফেরা বন্ধ করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। করোনা মেকাবেলায় এসব অভিযান অব্যাহত থাকবে। এসময় তিনি সকলকে ঘরে অবস্থান করার ও সামাজিক দুরত্ব বঝায় রাখার অনুরোধ জানান।