গণবাণী ডট কম:
বিদ্যুতের চাহিদা ও জোগানের মধ্যে সমন্বয় করতে না পারায় গত জুলাই থেকে দেশব্যাপী শিডিউল করে (বলা যায় রুটিন করে) লোডশেডিং দিচ্ছে সরকার। লোডশেডিংয়ের খড়গ এবার রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানায়ও পড়ছে। তাই বিদ্যুৎ চাহিদার চাপ কমাতে শিল্প-কারখানায় এলাকা ও জোন ভিত্তিক আলাদা সাপ্তাহিক ছুটি নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এলাকাভিত্তিক শিল্প-কারখানায় আলাদা সাপ্তাহিক ছুটি নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত সচিব) মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশের শিল্পাঞ্চলসমূহে বিদ্যুৎ সরবরাহ নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে ভিন্ন ভিন্ন দিনে সাপ্তাহিক ছুটি পুনর্বিন্যাস করার জন্য ১১ আগস্ট শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রণালয়ের চিঠির মর্মানুযায়ী পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ১১৪ (২) ধারার ক্ষমতাবলে এলাকাভেদে এ সাপ্তাহিক বন্ধের দিন ধার্য করা হলো।
সাপ্তাজিক ছুটি নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিদ্যুত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের এলাকাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। গাজীপুরে ৫টি প্রতিষ্ঠান বিদ্যুত সরবরাহ করে থাকে। এগুলো হলো: ঢাকা বিদ্যুত বিতরণ কর্তৃপক্ষ (ডেসকু), ঢাকা পল্লী বিদ্যুত সমিতি-১ (ঢাকা-১), গাজীপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতি-১ (গাজীপুর-১),গাজীপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতি-২ (গাজীপুর-২), ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুত সমিতি-২ (ময়মনসিংহ-২)।
আসুন এবার জেনে নেয়া যাক শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুরের কোন এলাকায় কবে সাপ্তাহিক ছুটি নির্ধারণ করা হয়েছে।
শুক্রবার যে সব এলাকায় সাপ্তাহিক ছুটি বহাল থাকছে সেসব এলাকা হলো:
ঢাকা-১ এর আওতাধীন গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক, ভান্নারা, সফিপুর ও ফুলবাড়িয়া এলাকা।
গাজীপুর-১ এর আওতাধীন গাজীপুর মহানগরীর জয়দেবপুর, সালনা এলাকা।
গাজীপুর-২ এর আওতাধীন গাজীপুরের কাপাসিয়া, আমরাইদ, টোক, সিংহশ্রী, ঘাগুটিয়া, তরগাও বারিষাব, চাঁদপুর এলাকা।
ময়মনসিংহ-২ এর আওতাধীন গাজীপুরের শ্রীপুরের গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি, বেড়াইদের চালা, বয়েরার চালা এলাকা।
ডেসকু: এর আওতাধীন গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী বিসিক এলাকা।
শনিবার যে সব এলাকায় সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে সেসব এলাকা হলো:
গাজীপুর-১ এর আওতাধীন গাজীপুর মহানগরীর পুবাইল এলাকা।
গাজীপুর ২ এর আওতাধীন গাজীপুর মহানগরীর কাওলতিয়া, সদর উপজেলার মির্জাপুর, মাস্টার বাড়ি এলাকা।
ডেসকু: এর আওতাধীন গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর মরকুন, শীলমন, গোপালপুর, মিরাস পাড়া, পাগার এলাকা।
রবিবার: যে সব এলাকায় সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে সেসব এলাকা হলো:
গাজীপুর-১ এর আওতাধীন গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর এলাকা।
গাজীপুর-২ এর আওতাধীন গাজীপুরের বাংলাবাজার, নয়াপাড়া, বাহাদুরপুর এলাকা।
ময়মনসিংহ-২ এর আওতাধীন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার জৈনাবাজার এলাকা।
ডেসকু: এর আওতাধীন গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গি পূর্ব থানা, ন্যাশনাল টিউব, ফাইসন্স, বনমালা এলাকা।
সোমবার: যে সব এলাকায় সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে সেসব এলাকা হলো:
গাজীপুর-১ এর আওতাধীন গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকা।
গাজীপুর-২ এর আওতাধীন গাজীপুর সদর উপজেলার মনিপুর, পিরোজআলী এলাকা
ডেসকু এর আওতাধীন গাজীপুর মহানগরীর এস্তেমা রোড (উত্তর) থেকে চেরাগ আলী এসকেসিসি (উত্তর) এলাকা।
মঙ্গলবার:যে সব এলাকায় সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে সেসব এলাকা হলো:
গাজীপুর-১ এর আওতাধীন গাজীপুর মহানগরীর কড্ডা এলাকা।
গাজীপুর-২ এর আওতাধীন গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর, নয়াপাড়া, বানিয়ারচালা এলাকা।
ডেসকু এর আওতাধীন গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর ইকুইপ রোড, দক্ষিণ আউচপাড়া, বাদাম, রেনাটা মেডিসিন ফ্যাক্টরি, মিল্কভিট্টা ফ্যাক্টরি এলাকা।
বুধবার : যে সব এলাকায় সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে সেসব এলাকা হলো:
ঢাকা-১ এর আওতাধীন গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা, কালামপুর, বড়ইবাড়ি, মাটিকাটা এলাকা।
গাজীপুর-১ এর আওতাধীন গাজীপুর মহানগরীর বোর্ডবাজার এলাকা।
গাজীপুর-২ এর আওতাধীন গাজীপুর মহানগরীর নলজানি, গাজীপুর সদর উপজেলার শিড়িরচালা, মেম্বার বাড়ি, ইন্দ্রবপুর এলাকা।
ময়মনসিংহ-২ এর আওতাধীন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার শ্রীপুর পৌরসভা ও আস্পাস এলাকা, বাঘনাহাটি, বৈরাগীচালা, বর্মী, টেংরা, উজিলাব এলাকা।
ডেসকু এর আওতাধীন গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর সাতাশ, খাপাড়া রোড, বিএটিবিসি ফ্যাক্টরি এলাকা।
বৃহস্পতিবার: যে সব এলাকায় সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে সেসব এলাকা হলো:
ঢাকা ১ এর আওতাধীন গাজীপুরের কালিয়াকৈর, নন্দন পার্ক, কাঞ্চনপুর, তালাবহ এলাকা।
গাজীপুর ১ এর আওতাধীন গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা এলাকা।
গাজীপুর ২ এর আওতাধীন গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর, শ্রীপুরের ধলাদিয়া, ফাওগান, সাটিয়াবাড়ী এলাকা।
ময়মনসিংহ ২ এর আওতাধীন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা, মাওনা বাজার, এমসি বাজার এলাকা।
এর আগে গত ৭ আগস্ট বিদ্যুৎ ভবনে শিল্পকারখানার মালিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ সংক্রান্ত বৈঠক করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এখন শিল্পাঞ্চলে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি কার্যকর আছে। একদিনে সব এলাকায় ছুটি না দিয়ে, যদি রেশনিংয়ের মাধ্যমে একেকদিন একেক এলাকায় ছুটি চালু করা যায়, তাহলে বিদ্যুতের কিছুটা সাশ্রয় হবে। শিল্প-কারখানায় বিদ্যুৎ রেশনিংয়ের ফলে প্রায় ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে বলেও আশা করা হচ্ছে।