গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের শ্রীপুরে মাদক ব্যবসার জের ধরে এক যুবককে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞেসাবাদের জন্য দুইজনকে আটক করেছে শ্রীপুর থানা পুলিশ।
নিহত যুবকের নাম আব্দুল লতিফকে (২৮)। তিনি গাজীপুর জেলার শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিম খন্ড (কড়ইতলা) এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে। লতিফ শ্রীপুরের এস এস পোশাক কারখানা কাজ করতো। অনুপস্থিতির কারণে গত কয়েকদিন আগে তাকে চাকুরিচুত্য করা হয়।
এ ঘটনায় জিগ্যাসাবাদের জন্য লতিফের বন্ধু আশরাফুল ও শিরিন নামের ২ জনকে পুলিশ আটক করেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, শ্রীপুর পৌরসভার বহেরারচালা এলাকার নাজমুল ইসলামের স্ত্রী শিরিন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। পুলিশ প্রশাসনসহ স্থানীয়রা সকলেই বিষয়টি জানে। ঈদের আগে শিরিনের বাড়িতে একাধিকবার পুলিশ তল্লাশি করে। শিরিনের বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি করার ঘটনায় জড়িত থাকার জন্য শিরিন লতিফকে সন্দেহ করে। সন্দেহ থেকে গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাত ৮টায় লতিফকে শিরিনের বাড়িতে ডেকে নেয়া হয়। পরে সেখানে তাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রাত সাড়ে ১০টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লতিফের স্ত্রী ও দুটি সন্তান রয়েছে।
নিহত লতিফের ছোট বোন খাদিজা আক্তার বলেন, বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক পৌণে ৮টার দিকে ঈদের দাওয়াতের কথা বলে মোবাইলে ফোন করে শ্রীপুর পৌরসভার বহেরারচালা এলাকার মাদক ব্যবসায়ী শিরিনের বাড়ীতে ডেকে নিয়ে যায় তার বন্ধু একই এলাকার সরাফত আলীর ছেলে মোফাজ্জল হোসেন। পরে খাওয়া-দাওয়া শেষে বাড়ীর বাহিরে বের হলে মোফাজ্জল আব্দুল লতিফকে বাঁশ দিয়ে এলাপাতাড়ি মারপিট করে। এক পর্যায়ে তার মাথায় আঘাত লাগলে সে মাটিতে পড়ে যায় এবং তার মুখ দিয়ে লালা পড়তে থাকে। এসময় প্রত্যক্ষদর্শী একই এলাকার ফাইজুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল ইসলাম রাত ৯টার দিকে আব্দুল লতিফকে আহত অবস্থায় তার বাড়ীতে রেখে যায়। পরে আশরাফুল লতিফের চাচাতো ও মামাতো ভাই ফারুক, নূর ইসলাম এবং কবির হোসেনকে ফোন করে জানায় আব্দুল লতিফকে মারধর করেছে। তাকে বাড়ীতে দিয়ে আসছি। খবর পেয়ে তারা শ্রীপুর থেকে বাড়ীতে গিয়ে আব্দুল লতিফকে বাড়ীর আঙ্গিনায় পড়ে থাকতে দেখে। তাদের দেখে গুরুতর আহত আব্দুল লতিফ বলে আমাকে মোফাজ্জল মারলো, কিছু করলে না তোরা। পরে দ্রত লতিফকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করে।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই ) তাজমুল ইসলাম জানান, ঘটনার খবর পেয়ে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালের দিকে হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। সুরতহাল করার সময় মাথার একটি স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান জানান, এ ঘটনার খবর পেয়ে লাশ উদ্ধা্র করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞেসবাদের জন্য ২ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা দায়ের করার প্রক্রিয়া চলছে।