গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট থেকে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে নব বিবাহীত ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক প্রেমিক যুগলের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অজ্ঞাত কারণে প্রথমে প্রেমিকা ও পরে প্রেমিক আত্মহত্যা করেছে।
লাশের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। চিরকুট থেকে তাদের আত্মহত্যার বিষয়টি ধারণা করা হচ্ছে।
আত্মহননকারী মোঃ ইসরাফিল (১৭)। তিনি শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি থানান হলদি গ্রামের মোঃ মফিজুল হকের ছেলে ও মোছাঃ রোকেয়া খাতুন (১৫)। তিনি ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার পস্তারি গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, গাজীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও পুলিশ সুপার হিসাবে পদোন্নতি প্রাপ্ত) মো: সানোয়ার হোসেন।
পুলিশ ও প্রতিবেশীরা জানান, পরস্পর প্রেমের সম্পর্কের পরিনতি হিসাবে দুই পরিবারের অমতে সাত-আট মাস আগে ইসরাফিল ও রোকেয়া বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলাধীন মুলাইদ গ্রামের মো. ফারুক হোসেনের বহুতল ভবনের নিচতলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলন। পাশের ফ্ল্যাটে ইসরাফিলের পিতা মাতাও বসবাস করেন। ইসরাফিল স্থানীয় একটি ওয়ার্কশপে আর রোকেয়া একটি কারখানায় কাজ করতেন। শুক্রবার সকালে স্বজনেরা তাদের ফ্ল্যাটের দরজা খোলা দেখে ভিতরে উকি দিয়ে রোকেয়ার লাশ বিছানায় এবং ইসরাফিলকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে পুলিশকে জানালে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এ সময় ওই কক্ষ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করে পুলিশ।
চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘মা-বাবা আমাকে মাফ করে দিও। আমি তোমাদের কাছে থাকতে পারলাম না। আমার জান আমার জন্য ফাঁসিতে ঝুলেছে। তাই আমি থাকতে পারলাম না। আমি কাউকে দোষারোপ করি না। কারও কোনো দোষ নাই। আমার জান আমার জন্য অপেক্ষা করছে। সবাই ভালো থাকবা, আমিন। মো. ইসরাফিল। মা আমার পাশে রোকেয়ার কবর দিও। মা আমি জানি না আমার জান কেন ফাঁসি দিল। তার জন্য সম্পূর্ণ আমি দায়ী। এতে কারও কোনো দোষ নাই।
নিহত ইসরাফিলের বাবা মফিজুল হক জানান, পাশাপাশি ফ্লাটে বসবাস করতেন তারা। পরিবারের রান্নার কাজ তারা ইসরাফিলের ফ্লাটে করতেন। শুক্রবার সকালে ইসরাফিলের ফ্লাটের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভেতরে যান এবং ইসরাফিলকে ওড়নায় পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় এবং রোকেয়ার মরদেহ খাটের উপর বিছানায় দেখতে পান। পরে পাশ থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে।
গাজীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো: সানোয়ার হোসেন বলেন, শ্রীপুর থানাধীন একটি ফ্ল্যাট থেকে ১৮ বছরের নীচের এক নব দম্পতির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সেখান থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। চিরকটের লেখা থেকে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রথমে স্ত্রী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পরে তার স্বামী লাশ নামিয়ে নেয়। বিষয়টি সইতে না পেরে স্বামী তার মাকে উদ্দেশ্য করে চিরকুট লিখে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন।
তিনি আরো বলেন, লাশ ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, চিরকুটের লেখাটি তাদের কি না সেটিও আমরা যাচাই করে দেখব।
মন্তব্য