গণবাণী ডট কম:
বাংলাদেশের মৌলভীবাজারে অবস্থিত এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকি হাওরকে রামসার সাইট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন আয়োজিত স্থানীয় ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গত ২২ নভেম্বর শুক্রবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে একটি হোটেলে দিনব্যাপী এই কর্মশালা অনুষ্টিত হয়। বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এ কে এম রফিক আহাম্মদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল্লাহ আল মোহসীর চৌধুরী প্রধান অতিথি ছিলেন। আরো উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. এস এম মনজুরুল হান্নান খান, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক বেগম নাজিয়া শিরিন এবং হাকালুকি হাওর তীরের কুলাউড়া, জুড়ি, বড়লেখা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বড়লেখা উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মৎস্য অফিসার, কৃষি অফিসার ও উপজেলা প্রকৌশলীগণ।
এতে ‘আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে হাকালুকি হাওরের প্রয়োজনীয় সব তথ্য রামসার সচিবালয়ের চাহিদা অনুসারে নির্ধারিত ছকে পূরণ করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর হাওরকে রামসার সাইট ঘোষণার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হবে।’
প্রসঙ্গত, রামসার কনভেনশন হলো বিশ্বব্যাপী জৈবপরিবেশ রক্ষার একটি সম্মিলিত প্রয়াস। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে ইরানের রামসারে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ কনভেনশন অন ওয়েটল্যান্ডস নামক একটি আন্তর্জাতিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এই চুক্তি অনুযায়ী আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমি হিসেবে বিভিন্ন জলাভূমিকে তালিকাভুক্ত করা হয়। ২০০০ সালে দেশের অন্যতম সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরও রামসার সাইটের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এবার হাকালুকি হাওর রামসার সাইটের অন্তর্ভুক্ত হলে মৎস্য অভয়াশ্রম, পাখির অভয়াশ্রম, উদ্ভিদ ও জলাভূমি সংরক্ষণে কাজ হবে করা সহজ হবে।
মৌলভীবাজারে পাঁচটি উপজেলায় ছড়িয়ে আছে হাকালুকি হাওর। ছোট-বড় ২৪০টি বিল নিয়ে হাওরের মোট আয়তন ১৮ হাজার হেক্টর। এই হাওরে বাংলাদেশের মোট জলজ উদ্ভিদের অর্ধেকের বেশি এবং সঙ্কটাপন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতি পাওয়া যায়।