নিজস্ব প্রতিবেদক, গণবাণী ডট কম, কাপাসিয়া:
গাজীপুরের ঐতিহ্যবাহী কাপাসিয়া বাজারে গত এক দশকে কোন উন্নয়ন কাজ করা হয়নি। একারণে অযত্ন ও অব্যবস্থাপনার সুযোগে অধিকাংশ ফুটপাত ও গলিপথ অবৈধভাবে দখল করে দোকান পাট নির্মাণ করায় বাজারে চলাচলের পথ সরু হয়ে পড়েছে। ফলে বাজারের আগত ক্রেতাদের ইচ্ছা থাকা সত্বেও সামাজিক দুরত্ব বঝায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। একারণে ক্রেতা বিক্রেতাদের করোনার সংক্রমণের ঝুকি নিয়ে বাজারে চলাচল করতে হচ্ছে।
জানা যায়, কাপাসিয়া বাজারে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৩ হাজারের মত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এদের মধ্যে চলতি অর্থ বছরে মাত্র ৮৫৪ জন ব্যবসায়ী কাপাসিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করেছে। অন্যরা কোন বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ব্যবসা পরিচালনা করছেন। অপরদিকে, কাপাসিয়া ভুমি অফিসের তথ্য মতে কাপাসিয়া বাজারে সরকারি চান্দিনা ভিটি রয়েছে ২২৭টি। এর মধ্যে মাত্র ২৩ জন ব্যবসায়ী সরকারের কাছ থেকে ২৩টি চান্দিনা ভিটি লিজ গ্রহণ করেছেন। অর্থাৎ কাপাসিয়া বাজারের বিপুল সংখ্যক ব্যবসায়ী সকরারি নিয়ম নীতি না মেনে অবৈধভাবে চান্দিনা ভিটি দখল করে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। ফলে সরকার তাদের কাছ থেকে কোন রাজস্ব পাচ্ছে না। উপরন্তু ক্রেতাদের নানা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বাজার ব্যবসায়ী সমিতির হিসাব মতে, বাজারের তাদের সদস্য সংখ্যা ২৬০০ থেকে ২৭০০ এর মতো। এছাড়া বাজারে রাস্তা গলিপথ দখল করে প্রায় তিনশ দোকান/টং দোকান গড়ে ওঠেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাজারের অধিকাংশ ব্যবসায়ীগণ তাদের দোকানের সামনের চলাচলের সরকারি রাস্তা, গলি পথে দোকানের কিছু মালামাল রেখে রাস্তা ও গলিপথ দখল করে রেখেছেন। ফলে রাস্তা ও গলিপথ সরু হয়ে লোক চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। আবার অনেক স্থানে লোক চলাচলের রাস্তা দখল করে সেখানে অস্থায়ী টং দোকান গড়ে তোলা হয়েছে। এসব দোকানে নি¤œমানের কসমেটিক্স, খেলনা, বিভিন্ন প্রকারের ফল বিক্রি করে। আবার কোথাও কোথাও বড় বড় দোকানের সামনের রাস্তা রখ এসব দোকান থেকে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নিয়মিত মাসোহারা পায় বলে জনশ্রুতি আছে। দোকানদার নিজের দোকানের সামনে মালামাল রাখার জন্য চৌকি নির্মাণ করেছেন, কেউ রোদ বৃষ্টি থেকে দোকানের বাইরে রাখা মালামাল রক্ষার জন্য মোটা পলিথিন বা ত্রিপল টানিয়ে সামনের রাস্তা বা গলিপথ দখল করে রেখেছেন। এসব কারণে বাজারের ভিতরের রাস্তা ও গলিপথগুলো বেদখল হয়ে থাকায় ক্রেতা বিক্রেতাদের চলাচল খুবই কষ্টকর হয়ে ওঠেছে। ভীড়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি করে ক্রেতাদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। একারণে ভীড় তৈরী হওয়ায় সামাজিক দুরত্ব বঝায় রাখা যাচ্ছে না। ফলে করোনা সংক্রমণের ঝুটি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্রেতাদেওর দুর্ভোগ লাঘব এবং চলমান করোনা সংক্রমণ রোধ করার জন্য সামাজিক দুরত্ব বঝায় রাখার স্বার্থে এসব অবৈধ দখল উচ্ছেদ করার দাবী ভুক্তভোগীদের।
কাপাসিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বদু এ বিষয়ে বলেন, কাপাসিয়া বাজারের অবৈধমদখল উচ্ছেদ করার জন্য উপজেলা প্রশাসন ও ব্যবসায়ী সমিতি ইতিপুর্বে নোটিশ জারি করেও এসব অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা যায়নি।
কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট আমানত হোসেন খান বলেন, বাজারের ক্রেতা বিক্রেতাদের সুবিধার জন্যই অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা প্রয়োজন। এতে বাজারে শৃংখলা ফিরবে এবং বন্ধ হবে প্রভাবশালীদের অবৈধ দখল বাণিজ্য।
এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি বলেন, আমি কাপাসিয়া বাজার ঘুরে দেখেছি। অনেক চাপাচাপি অবস্থা। গাজীপুর উন্নয়ণ প্রকল্প খাতে আমরা প্রায় ২৫০ কোটি টাকার মতো বরাদ্দ পাব। সেখান থেকে কাপাসিয়া বাজারের অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে একটি মেগা প্রকল্প নিয়ে বাজারের প্রয়োজনীয় সকল উন্নয়ন কাজ সম্পাদন করা হবে। বাজারের ক্রেতা বিক্রেতাদের দুর্ভোগ লাঘবে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।