গণবাণী ডট কম:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইঙ্গিত দিয়েছেন, আগামী মার্চ মাসেও হয়ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হতে পারে। শনিবার উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেছেন, “আমরা আশা করছি হয়তো আগামী মার্চ-এপ্রিল…..মার্চ মাসটা আমরা দেখবো, কারণ আমাদের দেশে মার্চ মাসেই ব্যাপকহারে করোনাভাইরাস শুরু হয়েছিলো”।
এর আগে স্কুল কলেজগুলোতে ৩৯ পাতার গাইডলাইন পাঠিয়ে বলা হয়েছিল, ৪ঠা ফেব্রুয়ারির মধ্যে স্কুলগুলো প্রস্তুত করে রাখতে, যাতে যে কোন মুহূর্তে খুলে দেয়া যেতে পারে।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সংসদে বলেছিলেন, তারা ফেব্রুয়ারির শেষে কিংবা মার্চে স্কুল খুলতে চান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ফেব্রুয়ারি মাস নজরে রাখবো এবং যদি ফেব্রুয়ারিতে ভালো থাকে পরবর্তীতে সীমিত আকারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তা ভাবনা আছে।
“এজন্য দরকার সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলা ও করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যা যা ব্যবস্থা আছে তা গ্রহণ করা। আর ভ্যাকসিন তো সবাই পেয়ে যাবেন, ” বলছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে শিক্ষা মন্ত্রনালয় থেকে স্কুল খোলা বিষয়ক যে গাইডলাইন দেয়া হয়েছিল, সে অনুযায়ী সরকারের অনুমোদন পেলে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরিয়ে নেয়ার পাশাপাশি অন্য শ্রেণীগুলোর জন্য সপ্তাহে এক বা দুদিন ক্লাস শুরু হওয়ার কথা।
বাংলাদেশে গত বছরের মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ আছে। পরে জুলাই থেকে অনলাইন, টেলিভিশন কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিকল্প শিক্ষাদানের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা খুব একটা সাফল্য পায়নি।
এর মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার কমে আসা ও ভ্যাকসিন দেয়া শুরুর প্রেক্ষাপটে কর্তৃপক্ষ স্কুলগুলো খুলে দেয়ার বিষয়ে প্রাথমিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।
পাশাপাশি চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সিলেবাস সংক্ষিপ্তকরণেরও কাজ করছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড।
স্কুল কবে খুলবে ২০২১:
গুগলে বাংলাদেশ থেকে গত এক সপ্তাহ ধরে অনেকেই এখন সার্চ করছেন, “স্কুল কবে খুলবে ২০২১” - এই শব্দবন্ধ দিয়ে।
এই সার্চ ট্রেন্ডই বলে দেয় বাংলাদেশে মানুষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া নিয়ে কতটা চিন্তিত। কারো চিন্তার বিষয়, খোলে না কেন? কারো চিন্তা, কেন খুলছে?
এরই মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী নোটিশ দিয়ে বলে দিয়েছে, ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখ পর্যন্ত শিক্ষা ছুটি বাড়ানো হয়েছে।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ইঙ্গিত অনুযায়ী মার্চ মাসেও যদিও স্কুল না খোলে, তাহলে সেটা যে আরো সেটা পিছিয়ে বছরের মধ্যভাগ পর্যন্ত চলে যাবে সেটা মোটামুটি বলা যায়।
কারণ এপ্রিল মাস থেকে শুরু হচ্ছে রমজান মাস। সাধারণ সময়ে এমনিতেই রমজান মাসে স্কুল কলেজ দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ থাকে।
যেসব স্কুল চলে, সেগুলোও সীমিত আকারে।
ফলে মহামারির মধ্যে এমনিতেই যেখানে স্কুল খোলা রাখা যাচ্ছে না, সেখানে রমজান মাসে যে স্কুল খোলা হবে না, সেটা ধরেই নেয়া যায়। আর রমজান শেষে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতরের ছুটি শেষ হতে হতে পার হয়ে যাবে মে মাসের মধ্যভাগ।
অবশ্য কর্মকর্তারা আগেই জানিয়েছিলেন যে, পরিস্থিতি পুরো নিয়ন্ত্রণে এলে পুরোদমে শিক্ষা কার্যক্রম চলবে এবং তখন প্রয়োজন হলে নির্ধারিত ছুটিগুলো অনেক কমিয়ে দেয়া হবে। খবর : বিবিসি।