গণবাণী ডট কম:
হেরোইন দিয়ে তৈরি ওপিওয়েডযুক্ত পণ্য জেনেশুনে বিক্রির করার দায়ে বিশ্ব বিখ্যাত স্বাস্থ্য পণ্য বিক্রেতা সংস্থা জনসন অ্যান্ড জনসনকে ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা জরিমানা করলো আদালত৷ ওপিওয়েড জাতীয় ওষুধ বিক্রির আগে ঐ ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্বন্ধে ক্রেতাকে সচেতন না করার অপরাধে যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমার একটি আদালত এ রায় দিয়েছে।
জানা যায়, যে ধরনের ওষুধে কিছু মাত্রায় হেরোইন থাকে, তাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ওপিওয়েড৷ নিয়মে এই ওষুধ বিক্রির আগে ডাক্তার বা বিক্রেতা সংস্থার দায়িত্ব ক্রেতাকে এই ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্বন্ধে যথেষ্ট পরিমাণে সচেতন করে দেওয়া৷ এই কাজেই ব্যর্থ হয়েছে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় স্বাস্থ্য পণ্য বিক্রেতা সংস্থা জনসন অ্যান্ড জনসন৷ শুধু সচেতনতা ছড়ানোয় ব্যর্থতাই নয়, জনসনের চাপে ডাক্তাররা এমন পণ্য ব্যবহারে বেশি উৎসাহিত করেছে ভোক্তাদের, বলা হয়েছে সেই মামলায়৷ এর ফলে, ওকলাহোমা রাজ্যে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে ওপিওয়েডযুক্ত ওষুধ৷ বেড়েছে আসক্তি৷ এতে জনসনের ভূমিকার জন্য তাকে ৫৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকার সমান) জরিমানা করেছে আদালত৷
জনসনের এই ঘটনা ছাড়াও এমন দুই হাজার মামলা আদালতে উঠেছে যেখানে, অ্যামেরিকার বিভিন্ন রাজ্যে ওপিওয়েড আসক্তি বাড়াচ্ছে এমন কিছু সংস্থার প্রোডাক্টের কথা রয়েছে৷ ওকলাহোমার এটর্নি জেনারেল মার্ক হান্টার জানাচ্ছেন, ২০০৭ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে মোট ৪ হাজার ৬৫৩ জন এই আসক্তির কারণে সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন৷ জনসনের অপরাধকে তিনি বর্ণনা করেন ‘দেশের সবচেয়ে খারাপ মানবসৃষ্ট স্বাস্থ্য সংকট’ হিসাবে৷
এক ধরনের ‘ব্রেনওয়াশিং’ বা মগজ ধোলাই ক্যাম্পেনের ফলে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বিক্রি হয়েছে জনসনের পণ্য৷ তুলনায় ভোক্তাদের জানানো হয়নি এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্বন্ধে৷ জেনেশুনে বিক্রি ও প্রচার চালিয়ে গেছে সংস্থাটি৷
ওকলাহোমার এই রায় ব্যতিক্রমী৷ এর আগে, বড় মাপের কোনো সংস্থাকে ওপিওয়েড আসক্তি ছড়ানোর দায়ে এমন অঙ্কের জরিমানা করা হয়নি৷ সরকারপক্ষের আইনজীবী জানান, বহু বছর ধরে জনসন অ্যান্ড জনসন প্রোডাক্টগুলির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জানা সত্ত্বেও তা বিক্রি করছে৷
জজ ঠাড বালকমান বলেন যে জনসনের এমন আচরণের ফলে গোটা বিষয়টি জনসাধারণের প্রতি অবিচারের সমমর্যাদার অপরাধ৷ তাই এমন দৃষ্টান্তমূলক জরিমানা আসলেই যথাযথ৷ সূত্র : ডয়চে বেলে।