গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে হাই সিকিউরিটি কারাগার (পার্ট-৪) এর বন্দীরা শীতবস্ত্রসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে অনশন করছে বলে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি গণমাধ্যমকর্মীদের নিকট দাবী করেছেন। তবে, কারাগার কর্তৃপক্ষ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবী করেছে।
শনিবার সকালে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি একটি বাংলালিংক নাম্বার (০১৯৩০০৮৬৭৮) দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ এর একটি আইডি থেকে পাঠানো ম্যাসেজে অভিযোগ করেন, হাই সিকিউরিটি কারাগার (পার্ট ৪),গাজীপুরের বন্দীরা বন্দীরা হাঙ্গার/অনশণ করছে। কারণ,এই প্রচন্ড শীতেও কম্বল,কাপড়, মশারী কেড়ে নিয়েছে, এতে তাদের প্রচন্ড হচ্ছে।এমনকি ঠান্ডার কারণে রুমের দরজা/জানালায় পলিথিনও লাগাতে দিচ্ছে না ফলে রুমগুলো ফ্রিজের মতো হয়ে গেছে। বিশুদ্ধ খাবার পানি দিচ্ছে না ফলে পানি বাহিত বিভিন্ন রোগ হচ্ছে। মেডিকেল এ নিচ্ছে না ফলে সঠিক চিকিৎসাও পাচ্ছে না। হাটার মতো জায়গা থাকার পরেও ছোট্ট জায়গায় আটকে রেখেছে যেটা আইন বিরোধী, হাটাহাটির অনুমতিও দেয় না ফলে শরীরে রোগের বাসা বাধছে। বন্দীদের ১৫ দিন পরপর সাক্ষাৎ এর নিয়ম থাকলেও ১ মাস পরে সাক্ষাৎ দিচ্ছে। কোর্টে যাওয়ার সময় নামাজ পড়ার জন্য জায়নামাজও সঙ্গে নিতে দিচ্ছে না।
পরে বিস্তারিত জানার জন্য উক্ত নাম্বারে একাধিকবার ফোন করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। হোয়াটসঅ্যাপ এ কল দিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে একটি সরকারি সংস্থার মাধ্যমে ঐ নাস্বারের লাস্ট কল ট্রেস করে দেখা গেছে, সেটি গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরের গোবিন্দপুর (কারাগার) এলাকায় সচল ছিল।
এসব বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করলে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে হাই সিকিউরিটি কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, কারাগারে বন্দীদের অনশনের কোন ঘটনা ঘটেনি।
তিনি আরো বলেন, হাই সিকিরিউটি কারাগারে বিভিন্ন মামলায় দন্ডিত ও দুর্ধর্ষ আসামী, বিভিন্ন জঙ্গি অপরাধে জড়িত অনেক আসামী এখানে বন্দি রয়েছে। ফাসির দন্ডপ্রাপ্ত অনেক আসামীও এখানে রয়েছে। এসব কারণে এখানে কারাবিধি অনুযায়ী বন্দিদের কড়া নজরদারীর মধ্যে রাখা হয়। কিছুদিন পূর্বে কয়েকজন জঙ্গি আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর সতর্কতামুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এসব নষ্ট করার জন্য হয়ত একটি মহল এসব প্রচারণা চালাচ্ছে। তাছাড়া ফাসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা মাসে একবার করেই সাক্ষাতের সুযোগ পেয়ে থাকেন। এবং তাদেরকে কারাবিধি অনুযায়ী আলাদা রাখা হয়। তারা অন্য বন্দিদের মতো কারাগারের ভিতর ইচ্ছামত হাটাহাটির সুযোগ পান না। তিনি বলেন, কারাগারের পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে।
এ বিষয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমান বলেন, কারাগারের ভিতরের কোন অব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কোন অভিযোগ কেউ আমার নিকট করেনি। এ ধরণের কোন সমস্যার কথাও আমার জানা নেই। আমাদের কাছে প্রচুর কম্বল রয়েছে। শীতবস্ত্রের জন্য যদি বন্দিরা কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে আমি খোঁজ নিয়ে আগামাকালই সেখানে কম্বল বিতরণের ব্যবস্থা করবো।