গণবাণী ডট কম:
একিদকে স্কটল্যান্ড হাইকোর্ট ঘোষনা করেছে সংসদ মুলতুবি রাখার পদক্ষেপ আইনসিদ্ধ নয় অপরদিকে সংসদের চাপে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে ব্রিটিশ সরকার আরও সমালোচনার মুখে পড়েছে৷ সব মিলিয়ে ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের দিনকাল ভালো যাচ্ছে না৷
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে শুধু একের পর এক পরাজয়ের মুখ দেখতে হচ্ছে তাঁকে৷ বিশেষ করে সংসদের সঙ্গে সংঘাতের যে মূল্য তাঁকে দিতে হচ্ছে, তা মোটেই সুখকর নয়৷ অধিবেশন মুলতুবি হবার আগে সংসদ এক প্রস্তাব পাশ করে সরকারকে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের প্রস্তুতি সংক্রান্ত গোপন নথিপত্র প্রকাশ করতে বাধ্য করেছিল৷ বুধবার রাতে প্রকাশিত ছয় পৃষ্ঠার সেই ‘অপারেশন ইয়েলোহ্যামার’ নথিপত্র পড়ে এমন পরিস্থিতির ভয়াবহ চিত্র সম্পর্কে জানতে পারছেন ব্রিটেনের মানুষ৷
সরকারের নিজস্ব পূর্ববাণী অনুযায়ী কোনো বোঝাপড়া ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করলে ব্রিটেনের জনজীবন নানা ক্ষেত্রে ব্যাহত হবে৷ ইংলিশ চ্যানেল পেরোতে গেলে শুল্ক ও অন্যান্য জটিলতার কারণে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে৷ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধের সরবরাহ থমকে যাবার ফলে বিশাল মূল্যবৃদ্ধি হতে চলেছে৷ বিদ্যুতের মাশুলও আচমকা বেড়ে যাবে৷ সামাজিক অস্থিরতা, প্রতিবাদ-বিক্ষোভ পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলবে৷ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে৷ গত দোসরা আগস্ট এই নথি প্রস্তুত করা হয়েছে৷ এর আগে দ্য সান্ডে টাইমস সংবাদপত্র তার কিছু অংশবিশেষ প্রকাশ করেছিল৷ সমালোচকদের মতে, এই রিপোর্টের ফলে সরকারের প্রস্তুতির অভাবও স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে৷ সরকার অবশ্য দাবি করছে, যে রিপোর্ট লেখার পর থেকে প্রস্তুতি আরও জোরদার করা হয়েছে৷
এমন পরিস্থিতির আশঙ্কা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী ‘যে কোনো মূল্যে’ ৩১শে অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করার যে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন, সেই মনোভাবের তীব্র সমালোচনা শোনা যাচ্ছে৷ এমনকি তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন বলে বিরোধীরা অভিযোগ করছে৷ লেবার দলের ব্রেক্সিট বিশেষজ্ঞ কির স্টার্মার বলেন, সরকার এমন সব হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে ও মানুষকে অন্ধকারে রেখে অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করেছে৷ তিনি সংসদের জরুরি অধিবেশন ডেকে এই সব নথিপত্র খতিয়ে দেখে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট থামাতে যাবতীয় পদক্ষেপ নেবার ডাক দিয়েছেন৷
প্রায় এক মাস সংসদ মুলতুবি রেখে বরিস জনসন আইন ভেঙেছেন বলে রায় দিয়েছে স্কটল্যান্ড হাইকোর্ট৷ সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করায় আগামী সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে চূড়ান্ত রায় দেবে৷ সেই রায়ও যদি সরকারের বিপক্ষে যায়, সে ক্ষেত্রে আবার সংসদের অধিবেশন ডাকতে হবে৷ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বরিস জনসন মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে রানিকে এত দীর্ঘ সময়ের জন্য সংসদ মুলতুবি রাখার পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছিলেন, এমন অভিযোগ আরও জোরদার হচ্ছে৷
খবর : ডয়চে ভেলে ও অন্যান্য সূত্র।