গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের শ্রীপুরে কোমরে ইট বেধে ডোবার পানিতে ডুবিয়ে লাশ গুম করার প্রায় ১৩ মাস পর এক নারীকে হত্যার রহস্য উদঘাটন ও জড়িত তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধিতে ঘটনার বিস্তারিত প্রকাশ করেছে। গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জোবায়দা নাসরিন বন্যার আদালতে বৃহস্পতিবার আসামীদের মধ্যে রাজিব মোড়ল স্বীকািরোক্তি দেয়। জবানবন্ধিতে তিনি জানান, ফুর্তি করার জন্য ঐ নারীকে একরাতের জন্য এনে সবাই একসাথে ইয়াবা সেবনের পর নারীর সাথে শারিরিক সম্পর্ক করে। পরে লেনদেন নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় কথা কাটাকাটি কারণেই শ্বাসরোধে হত্যার করে হাত, পা ও কোমড়ে ইট বেঁধে মরদেহ ডোবার পানিতে ডুবিয়ে দেয়া হয়।
গ্রেফতার আসামীরা হলো, গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার টেপিরবাড়ি গ্রামের মো. আবুল হোসেনের ছেলে মো. মোখলেসুর রহমান (৩১), একই গ্রামের ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে মো. খোকন মিয়া (২৭) ও মোঃ মাসুদ রানার ছেলে মো. রাজীব মোড়ল (২৬)। তাদের মধ্যে মোখলেসুর ও খোকন মিয়াকে মঙ্গলবার ভোরে ও রাজীব মোড়লকে বুধবার রাতে টেপিরবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
মরদেহটি সম্পূর্ণ পঁচে যাওয়ায় আঙ্গুলের ছাপ নেয়া সম্ভব হয়নি, তাই অজ্ঞাত ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন, গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান।
তিনি আরো জানান, গত বছরের ২৫ জুলাই গাজীপুরের শ্রীপুরের টেপিরবাড়ি গ্রামের সুমন মিয়ার ডোবা থেকে হাত, পা বাঁধা ও কোমরে তিনটি ইট বাঁধা ৩০ বছর বয়সী এক নারীর গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সজীব হাসান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ দুই মাস মামলাটি তদন্ত করে কোন তথ্য উৎঘাটিত না হওয়ায় গাজীপুর পিবিআই’য়ের উপর মামলাটি তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়।
তিনি বলেন, তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর মামলার নথিপত্র, পারিপার্শিক অবস্থা এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মামলার ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামিদেরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আসামীদের মধ্যে রাজিব মোড়ল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্ধি দিয়েছে। বাকী দুজনকে পরে আদালতের মাধ্যমে জিগ্যসাবাদের জন্য জিম্মায় আনা হবে।
তিনি আরো বলেন, গত বছর ঘটনার ৩/৪দিন আগে তারা তিন বন্ধু মিলে চায়ের দোকানে বসে ইয়াবা সেবনের পাশপাশি এক নারীকে এনে শারিরিক সম্পর্ক করে ফূর্তি করতে বলে পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন রাত ১০টার দিকে টেপিরবাড়ি গ্রামের সুমনের বাড়ির পাশে নির্জন জায়গাতে যায় এবং মেয়েটিকে নিয়ে ইয়াবা সেবন করে। সেখানে তারা প্রায়ই ইয়াবা সেবনের আড্ডা বসাতো। ইয়াবা সেবনের পর মেয়েটির সাথে তারা শারিরিক সম্পর্র্ক করে। পরে শারিরিক সম্পর্কের লেনদেন নিয়ে মেয়েটির সাথে তাদের বনিবনা হয়নি। এ নিয়ে মোখলেস, খোকন ও রাজিবের সাথে মেয়েটির কথা কাটাকাটি হলে এক পর্যায়ে তারা মেয়েটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পাশের সুমনের মালিকানাধীন একটি পানি ভর্তি ডোবায় মধ্যে হাত পাঁ ও কোমড়ে ইট বেঁধে মরদেহটি ডুবিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।