গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন সাজনধার এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে কলেজ শিক্ষক ভাইকে পিটিয়ে হত্যা মামলার হুকুমদাতা আসামী বড় ভাই, মূল পরিকল্পনাকারী ছোট ভাই ও দুই ভাতিজাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১।
গ্রেফতার আসামীদের মধ্যে একজনকে ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে করে গ্রেফতার করে থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়। অপর ৩জনকে সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থানাধীন জয়ের টেক এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি বিকালে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন ঢালজোড়া ইউনিয়নের সাজনধারা এলাকায় জমিতে আগাছা পরিস্কার করার সময় ভাই ও ভাতিজাদের আঘাতে মারা যান রেজা সাইদ আল মামুন (৫০)। তিনি ঐ এলাকার পিতা-মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি কালিয়াকৈর থানাধীন চন্দ্রায় অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান ছিলেন।
গ্রেফতার আসামীরা হলো, হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী নিহতের ছোট ভাই মোঃ মজিবর রহমান (৫০),তার ছেলে মোঃ সুমন (২৮)ও মোঃ সিজান (২০)। অপর হুকুমের আসামী নিহতের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী (৬০)।
মঙ্গলবার সকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন, র্যাব-১ গাজীপুর স্পেশালেইজড কোম্পানী কমান্ডার মেজর মোঃ ইয়াসির আরাফাত হোসেন।
তিনি আরো জানান, নিহত রেজা সাইদ আল মামুন একজন স্বনামধন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজে অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। গত ২৮ জানুয়ারি বিকালে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন ঢালজোড়া ইউনিয়নের সাজনধারা এলাকায় রেজা সাইদ আল মামুন নিজের ভোগ দখলীয় ধান ক্ষেতের দক্ষিণ পাশে আইলের উপর কাজ করার সময় গ্রেফতার আসামীরা কাঠের লাঠি, দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সজোরে আঘাত করে মামুনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর নীলাফুলা জখম করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে নিহতের বাড়ীতে অনধিকার প্রবেশ করে বাড়ী-ঘর ভাংচুর করাসহ হুমকি ধমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্ত্রী হাসিনা আক্তার (৪৫) বাদী হয়ে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানায় ৪ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ছোট ভাই মজিবুর ও তার ছেলে মুল আসামী ও নিহতের বড় ভাই মোহাম্মদ আলীকে হুকুমের আসামী করা হয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তা আরো বলেন, ঘটনাটি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারিত হয় এবং এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করায় এ ঘটনায় জড়িত আসামীকে গ্রেফতারের জন্য র্যাব-১, গাজীপুরের স্পেশালাইজড কোম্পানী পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের আভিযানিক ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং আসামী গ্রেফতারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
তিনি আরো বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় হত্যা মামলার হুকুম দাতা হিসাবে এজাহারনামীয় আসামী মোহাম্মদ আলী (৬৫) কে হত্যার ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরে ৩০ জানুয়ারি ভোররাত ৩টার দিকে র্যাব-১ তথ্য প্রযুক্তি ও বিশ্বস্ত গোপন সূত্রে জানতে পারে, মামলার মূল পরিকল্পনাকারী পলাতক আসামী মোঃ মজিবুরসহ অন্যান্য আসামীগণ গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থানাধীন জয়ের টেক এলাকায় আত্মগোপনে আছে। এমন সংবাদের ভিতিত্তে র্যাব-১ এর আভিযানিক দল সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে মামলার মূল পরিকল্পনাকারী পলাতক আসামী মোঃ মজিবর (৫০), তার ছেলে মোঃ সুমন (২৮) ও মোঃ সিজান (২০) কে কোনাবাড়ী থানাধীন জয়ের টেক এলাকার জনৈক হাসেম খানের বাড়ী হতে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রধান আসামী মোঃ মজিবুর জানায়, আসামী ও ভিকটিমের মধ্যে দির্ঘদীন যাবত জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। উক্ত বিরোধের জের ধরে গত ২৮ জানুয়ারি বিকালে আসামীগন তাদের চাষকৃত ধানী জমিতে আগাছা পরিস্কার করতে যায়। পরে রেজা সাইদ আল মামুনও তার চাষকৃত ধানী জমিতে যায়। সেখানে মোহাম্মদ আলীর হুকুমে পূর্ব পরিকল্পনা মতে আসামীগন অর্তকিতভাবে ভিকটিম বুঝে উাঠার পূর্বে তাদের হাতে থাকা কাঠের লাঠি, দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সজোরে আঘাত করে ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর নীলাফুলা জখম করে মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামাগণ পালিয়ে যায়।
তিনি আরো জানান, আসামীদের সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।