গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধদের মধ্যে সোলায়মান মোল্লা নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি শুক্রবার রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে মারা যান।
মৃত্যুবরণকারীর নাম সোলায়মান মোল্লা (৪৫)। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার হাট বায়রা গ্রামে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক সার্জন ডা. মৃদুল কান্তি সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ডা. মৃদুল কান্তি সরকার জানান, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে মারা যান সোলায়মান মোল্লা। তিনি আরও জানান, তাঁর শরীরের ৯৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। আজিজুল নামে একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিরা এখনো হাসপাতালে ভর্তি।
এই ঘটনায় আরও দগ্ধ হন সোলায়মানের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী শিল্পী আক্তার (৪০) এবং তাঁর দুই ছেলে নুর নবী নিলয় (৩) ও নীরব (৭)।
সোলায়মান মোল্লার ছেলে আকাশ জানান, গাজীপুরে তারা ভাড়া থাকেন। তাঁরা ভাঙারির ব্যবসা করতেন। ঘটনার সময় বাইরে রাস্তায় ছিলেন তাঁর বাবা।
কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ বলেন, নিহতের লাশ উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তার গ্রামের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়া তার দাফন কাফনের খরচ প্রশাসন বহন করবে।
এলাকবাসী ও পুলিশ জানায়, কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিরচালা টপস্টার কারখানার পাশে এক ব্যক্তি জমি ভাড়া নিয়ে সেখানে পাশাপাশি অর্ধ শতাধিক টিনশেড ঘর তৈরী করে ঘর ভাড়া দিয়েছেন শফিকুল ইসলাম। এসব ঘরে বিভিন্ন শিল্পকারখানার শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষ বসবাস করেন। শফিকুল ইসলাম একটি ঘরে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছিলেন। বুধবার সন্ধ্যায় তার ঘরের সিলিন্ডারের গ্যাস শেষ হয়ে যায়। পরে তিনি পাশের একটি দোকান থেকে নিজেই একটি গ্যাস সিলিন্ডার ক্রয় করে এনে ঘরের ভিতর চুলার সাথে সংযোগ দেয়ার চেষ্টা করেন। এসময় সিলিন্ডারটি চুলার সাথে সংযোগের চাবি ভেংগে যায়। এতে সিলিন্ডারের গ্যাস তার ঘরের ভিতর ছড়িয়ে পরছিল। এসময় তিনি গ্যাস সিল্নিডারটি তার ঘর থেকে বাইরে লোক চলাচলের গলিতে ফেলে দেন। তখন গ্যাস ঘরের বাইরে ঐ গলি ও আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় আশপাশের চলাচলকারী লোকজন ও গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা দেখতে অনেক লোক ভীড় করেন। তখন অন্য ঘরের লাকরী দিয়ে রান্নার আগুন ছড়িয়ে পড়া গ্যাসের সংস্পর্শে আসলে আগুন ধরে যায়। তখন আশপাশের ঘরের ও বাইরে থাকা নারী, পুরুষ ও শিশুদের শরীরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে আশপাশের উৎসুক নারী, পুরুষ ও শিশুদের শরীরে আগুন লেগে ৩৬ জন দগ্ধ হন। পরে স্থানীয়রা তাদের শরীরের আগুন নিভিয়ে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যান। সেসব হাসপাতালে তাদের মধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ৩৪ জনকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ণ ইনষ্টিটিউটে পাঠানো হয়। বাকী ২ জন স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।