গণবাণী ডট কম:
দেশ-বিদেশে বহুল আলোচিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনার সাত বছর আজ। ২০১৩ সালের এই দিনে সাভারের রানা প্লাজা নামে ৯ তলা ভবন ধসে ১ হাজার ১৩৬ শ্রমিক নিহত হন। আহত হন আরো প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক।
গত সাত বছরে দেশের গার্মেন্টস খাত অনেক চড়াই-উতরাই পার করেছে। স্থানীয় ও বিদেশি চাপে এ খাতের কর্মপরিবেশের অগ্রগতি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও পেয়েছে। তবে এই সময়ে মালিক শ্রমিক দূরত্ব কমানোর ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত অগ্রগতি হয়নি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শ্রমিকনেতারা বলছেন, মালিকপক্ষ মুনাফা ছাড়া আর কিছুই বোঝেন না। এজন্যই করোনা ভাইরাসের মতো কঠিন পরিস্থিতিতেও কারখানায় টেনে আনতে কুণ্ঠাবোধ করছেন না। এতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি আরো ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
শ্রমিকনেত্রী জলি তালুকদার গণমাধ্যমকে বলেন, শ্রমিকের স্বার্থ এবং শ্রম আইন উপেক্ষা করে মালিকপক্ষ করোনা ভাইরাসের দোহাই দিয়ে গত কয়েক দিনে অন্তত ২৫ হাজার শ্রমিককে ছাঁটাই করেছে। বহু কারখানা লে-অফ ঘোষণা করেছে। এদিকে সাত বছর পার হতে চললেও রানা প্লাজা ধসের পেছনে প্রকৃত দায়ীদের এখনো বিচার হয়নি। ফলে ঐ ঘটনায় নিহতদের পরিবার এবং আহতদের দীর্ঘশ্বাস কমেনি। জানা যায়নি এ ঘটনার পেছনে প্রকৃত দোষী কে বা কারা।
অন্যদিকে আহত শ্রমিকদের বড়ো অংশই নানা শারীরিক জটিলতায় এখন আর কাজ করতে পারছেন না। করোনা ভাইরাসের এ পরিস্থিতিতে এসে আরো বেশি কষ্টের মধ্যে পড়েছেন তারা। অভিযোগ রয়েছে, আহত সব শ্রমিক চিকিত্সা না পাওয়ার। অন্যদিকে নিহতদের সবার পরিবারও ক্ষতিপূরণ পাননি।
রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার লক্ষ্যে একটি কমিটি কাজ করছে। ঐ কমিটির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আহতদের চিকিত্সা-কার্যক্রম এখনো চলছে। এদিকে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার বর্ষপূর্তিতে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও ফোরাম বিবৃতি দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক শ্রমিক অধিকার ফোরাম ক্লিন ক্লথস ক্যাম্পেইন এক বিবৃতিতে রানা প্লাজার পর করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতিকে শ্রমিকদের জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এ পরিস্থিতিতে শ্রমিক ছাঁটাই না করতে মালিকপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে বায়ারদেরও দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
দেশেও শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামসহ একাধিক সংগঠন বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্রমিক ছাঁটাই না করা এবং কারখানা লে-অফ না করার দাবি জানিয়েছে।