গণবাণী ডট কম:
রাজধানী ঢাকার গাবতলী বাস টার্মিনালে পরিবহন শ্রমিকরা খাদ্য সহায়তার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। এসময় তারা ঢাকার প্রবেশমুখে রাস্তায় অবরোধ সৃষ্টি করে।
বিক্ষোভে অংশ নেয়া শ্রমিকরা বলেছেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হবার পর থেকে তারা কোন আর্থিক কিংবা খাদ্য সহায়তা পাননি। বিক্ষোভে অংশ নেয় শ্রমিকরা বলেন, প্রতিদিনের আয় রোজগারের উপর তাদের সংসার চলে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৬ মার্চ থেকে গণ-পরিবহন বন্ধ থাকায় তারা নিদারুণ আর্থিক কষ্টে পড়েছেন বলে শ্রমিকরা উল্লেখ করেন। শ্রমিকরা বলেন, হয়তো গণ-পরিবহন চালু করতে হবে, নতুবা তাদের খাদ্য সাহায্য দিতে হবে।
এর আগে ৩ রা মে ঢাকার মিরপুরে কয়েক হাজার পরিবহন শ্রমিক ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ করে। এছাড়া সাভার, কুড়িগ্রাম এবং বরিশালেও শ্রমিক বিক্ষোভ হয়েছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বিবিসি বাংলাকে বলেন, দেশজুড়ে লকডাউন শুরু হবার কয়েকদিন পরে পরিবহন শ্রমিকদের জন্য সহায়তা চেয়ে দেশের সবগুলো জেলায় জেলা প্রশাসকদের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
কিন্তু এক্ষেত্রে প্রত্যাশিত সাড়া পাওয়া যায়নি বলে শ্রমিকরা অভিযোগ করছেন।
মি. আলী বিবিসি বাংলাকে বলেন, কোন কোন জেলায় পরিবহন শ্রমিকদের কিছু খাদ্য সহায়তা দেয়া হলেও সেটি পর্যাপ্ত নয়।
“প্রত্যেকটা জেলা প্রশাসকের কাছে আমরা পরিবহন শ্রমিকদের তালিকা দিয়েছে। আমরা ভিক্ষা চাইনা। ওএমএস-এর চাল দেয়া হোক শ্রমিকদের জন্য। প্রত্যেকটা বাস টার্মিনালে ওএমএস-এর ট্রাক পাঠানো হোক,” বলছিলেন মি. আলী।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের হিসেব অনুযায়ী তাদের সংগঠনের রেজিস্টার্ড ৫০ লাখ শ্রমিক রয়েছে। এর বাইরে আরো ২০ লাখ শ্রমিক রয়েছে রয়েছে বলে ফেডারেশন বলছে।
লকডাউনের পর পরিবহন শ্রমিকরা যখন ত্রাণের দাবিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করেছ তখন প্রশ্ন উঠেছে যে শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের নামে যে চাঁদা তোলা হয় সেটি কোথায় যায়?
সে তহবিল থেকে শ্রমিকদের কেন সহায়তা দেয়া হয়না?
শ্রমিক নেতার বলছেন, এ টাকা বিভিন্ন সময় ‘শ্রমিকদের কল্যাণের’ জন্যই ব্যবহার করা হয়।
মি. আলী বলেন, “ঢালাওভাবে এটা বলা দুঃখজনক। আমরা প্রতিবছর আয়-ব্যয়ের হিসেব সরকারের শ্রম অফিসে জমা দেই। সেখানে বিষয়টা পরিষ্কার করে উল্লেখ করা থাকে।”
তিনি দাবি করেন, এর মাধ্যমে শ্রমিকদের মাঝে ‘বিভ্রান্তির’ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
এদিকে মালিকপক্ষ বলছে, সরকারের সহায়তা ছাড়া শ্রমিকদের প্রয়োজন মেটানো সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বিবিসি বাংলাকে বলেন, লকডাউনের কারণে পরিবহণ মালিকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, “মালিকরা নিজেরাই তো বিপদে আছে। যার একটা বা দুইটা গাড়ি সে তো বিরাট সমস্যায় পড়েছে। তাদের ইনকাম না থাকলে শ্রমিকদের সাহায্য করবে কিভাবে?”
তিনি দাবি করেন, মালিকরা তাদের সাধ্যমতো শ্রমিকদের সহায়তা করেছে।