গণবাণী ডট কম:
বিশ্ব মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘ ১১ মাস দেশের কারাগারগুলোতে বন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের দেখা-সাক্ষাতৎ বন্ধ ছিল। দেশে করোনা সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় গত ১ মার্চ থেকে শর্ত সাপেক্ষে এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর স্বজনদের সাথে দেখা করার সুযোগ পাচ্ছেন কারাগারের চার দেয়ালের ভিতর আটক থাকা বন্দিরা।
কারাসূত্র জানায়, দেশের ৬৮টি কারাগারে বর্তমানে মোট বন্দির সংখ্যা প্রায় ৮৭ হাজার। দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর দেশের কয়েকটি কারাগারে প্রায় শতাধিক বন্দি করোনায় আক্রান্ত হয়। তাদের মধ্যে অনেককেই কারাগারের ভিতরের ও বাইরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এ অবস্থায় কারা কর্তৃপক্ষ বন্দিদের মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করার লক্ষে ও বন্দিদের নিরাপদ রাখতে গত ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে দর্শনার্থীদের সাক্ষাতৎ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। তবে এ সময় বিকল্প হিসেবে বন্দিরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন।
গত জুনে দেশে সাধারণ ছুটি প্রত্যাহার হবার পর থেকে আস্তে আস্তে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এ অবস্থায় বন্দিদের স্বজনরাও কারা কর্তৃপক্ষকে বার বার তাগাদা দিচ্ছিল বন্দিদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেতে। সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় কারা কর্তৃপক্ষ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করে দর্শনার্থীদের সাক্ষাতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয়।
শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, দর্শনার্থীদের মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক। দেখা করার আগে হাত ধুতে হবে। সাধারণ বন্দিদের সাথে ১৫ দিন পর পর দেখা করা যাবে। জঙ্গি বা দুর্ধর্ষ বন্দিদের ক্ষেত্রে ৩০ দিন। একবার একজনই দেখা করতে পারবেন এবং তাকে হতে হবে পরিবারের সদস্য ইত্যাদি।
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ২ এর জেলার আবু সায়েম জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর সারাদেশের কারাগারের বন্দিরা শর্ত মেনে ১ মার্চ থেকে স্বজনদের সাথে দেখা করার সুযোগ পাচ্ছেন। দেশের অন্যান্য কারাগারের ন্যায় এ কারাগারেও বন্দিরা শর্ত সাপেক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বজনদের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পাচ্ছেন। আমরা একজন বন্দির সাথে একজনকে সাক্ষাতের সুযোগ দিচ্ছি। তারা ১৫ দিন পর পর স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। তবে জঙ্গি বা দুর্ধর্ষ বন্দিদের ক্ষেত্রে ৩০ দিন পর স্বজনরা দেখা করতে পারবেন। সাক্ষাতের ক্ষেত্রে যেসব শর্ত দেয়া হয়েছে, সেগুলো আমরা কঠোরভাবে অনুসরণ করছি।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরানীগঞ্জ) জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ গণমাধ্যমকে বলেন, দীর্ঘদিন পর দর্শনার্থীরা বন্দিদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছেন। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে। দর্শনার্থীদের মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি দেখা করার আগে হ্যান্ডওয়াশ করতে হবে। ১৫ দিন পর পর দেখা করা যাবে। কোনো কোনো বন্দির ক্ষেত্রে ৩০ দিন। এক জনই দেখা করতে পারবেন এবং তাকে হতে হবে পরিবারের সদস্য। দেখা করার সময় সর্বোচ্চ ১০ মিনিট।