গণবাণী ডট কম:
আগামীকাল বুধবার ২০২১ সালের প্রথম ব্লাড মুন দেখা যাবে। পূর্ণিমায় এমনিতেই সাগরে জোয়ারের উচ্চতা অন্য সময়ের থেকে বেশি থাকে। ফলে আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, এবারের ঘূর্ণিঝড় শক্তিশালী হতে পারে।
স্যাটেলাইট চিত্রে ইয়াসের অভিমুখ উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূল নির্দেশ করলেও বুধবার বাংলাদেশের উপকূলেও আছড়ে পড়তে পারে। তবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুরসহ উপকূলীয় অঞ্চলে পূর্ণিমার ভরা কোটালে উচ্চ জলোচ্ছ্বাস এবং তুমুল ঝড়ো বৃষ্টিপাত হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভরা কটাল অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে পৃথিবী, চাঁদ ও সূর্য একই সরল রেখায় অবস্থান করলে, চন্দ্র ও সূর্যের মিলিত বলের প্রবল আকর্ষণে যে তীব্র জোয়ারের সৃষ্টি হয়, তাকে তেজ কটাল বা ভরা কটাল বা ভরা জোয়ার বলে। এই সময়ে সাধারণ সময়ের চেয়ে ৮/১০ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা থাকে।
১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল ভরা পূর্ণিমায় ‘বিওবি-১’ নামে চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানে এক ভয়াল ঘূর্ণিঝড়। ওই ঘূর্ণিঝড়ে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয় উপকূলীয় এলাকা। প্রাণ হারান দেড় লাখের মতো মানুষ। সর্বস্ব হারায় ১ কোটি উপকূলীয় বাসিন্দা।
৩০ বছর পর আবারও ভরা পূর্ণিমায় ঘূর্ণিঝড় হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর ফলে কাকতালীয়ভাবে বাড়তে পারে ক্ষয়ক্ষতি। ফলে উদ্বিগ্ন আবহাওয়াবিদরা। বঙ্গপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আগামীকাল বুধবার উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে।
আবহাওয়ার এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৯ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ২ নম্বর (পুন) ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়াও উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সাথে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে। খবর : দৈনিক ইত্তেফাক।