গণবাণী ডট কম:
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, বিশ্ব মহামারি করোনা ভাইরাস বা কোভিড ১৯ এর উর্ধ্বমূখী সংক্রমণ রোধে ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তিনি আজ শুক্রবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ।
প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, ১৪ এপ্রিল থেকে দেশে জরুরি সেবা ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ থাকবে। অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া সকল গণপরিবহনও বন্ধ থাকবে। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই কঠোর লকডাউন। করোনার ঊর্ধ্বগতি ঠেকানোর জন্য এর কোনো বিকল্প নেই।
দ্বিতীয় দফায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপক ভাবে বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এর আগে গত ৫ই এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এক সপ্তাহের জন্য ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ আরোপ করেছিলো সরকার, যা লকডাউন হিসেবেই পরিচিতি পায়।
এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সব ধরণের গণপরিবহন ছাড়াও দোকানপাট, শপিং মল বন্ধ থাকার কথা। একই সাথে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের না হতে বলা হয়েছিল। তবে কলকারখানা, কাঁচাবাজারসহ কিছু প্রয়োজনীয় দোকানপাট খোলা থাকারও সুযোগ রাখা হয়।
এসব বিধিনিষেধ কার্যকরের আগেই ঢাকা ছাড়ে লাখ লাখ মানুষ। আবার বিভিন্ন জায়গায় বিধিনিষেধ কার্যকর করা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।
অন্যদিকে, শুধু গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়ে অফিসগামী মানুষ।
এমন প্রেক্ষাপটে সরকার বিধিনিষেধ শিথিল করে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয় এবং আজ শুক্রবার থেকে শপিংমল ও দোকানপাট স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলার অনুমতিও দেয়া হয়েছে।
এভাবে কার্যত অচল হয়ে পড়ে সব বিধিনিষেধ, আর এরই মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ও এতে মৃত্যুর সংখ্যাও।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যবিভাগ জানিয়েছে যে তার আগের চব্বিশ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা ছিলো এক দিনে এ যাবত কালের সর্বোচ্চ - ৭৪ জন।
এছাড়া, প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছে নতুন করে ৬/৭ হাজার মানুষ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজেই এ অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন সবাই সচেতন না হলে পুরো শহরকে হাসপাতাল বানালেও রোগীর জায়গা দেয়া সম্ভব হবে না।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা সর্বাত্মক লকডাউন আরোপ এবং এক্ষেত্রে প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সহায়তা নেয়া বা রাত্রিকালীন কারফিউ দেয়ার মতো সিদ্ধান্ত নেয়ারও পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
ওদিকে সরকারের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত যে জাতীয় কমিটি রয়েছে, তারাও পরিস্থিতিকে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচনা করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে।
আজ সকালে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ১৪ই এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক লকডাউন আরোপের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।