নিজস্ব প্রতিবেদক, কাপাসিয়া (গাজীপুর):
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় পারিবারীক কলহের জের ধরে স্বাসরোধ করে স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ নিজ ঘরের খাটের নীচে দুইদিন লুকিয়ে রাখে পাষন্ড স্বামী। এসময় স্ত্রী পালিয়ে গেছে জানিয়ে সকলকে বোকা বানিয়ে স্ত্রীকে খাঁজার অভিনয় করে সে। পরে পরিবারের অন্যদের সন্দেহ হলে ঘরের ভিতর খাটের নীচ থেকে গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ঘাতক স্বামীকে আটক করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে কাপাসিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামে।
গ্রেফতার স্বামীর নাম জসিম উদ্দিন প্রধানকে (২৫)। তিনি মধ্যপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছোট ছেলে। জসিম উদ্দিন পেশায় রাজমিস্ত্রির সহযোগী।
নিহত বধুর নাম সুমাইয়া (১৯)। তিনি গাজীপুর জেলা শ্রীপুর উপজেলার হায়াতখাঁর চালা গ্রামের জজ মিয়ার মেয়ে।
কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এ এফ এম নাসিম জানান, প্রায় এক বছর আগে সুমাইয়ার সাথে পারিবারিকভাবে জসিমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মাঝে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। এতে করে সুমাইয়া প্রায়ই বাপের বাড়ি চলে যেত। গত শনিবার সকালে সুমাইয়া মোবাইল ফোনে দীর্ঘ সময় কথা বলার সূত্র ধরে স্বামী স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া হয়। পরে জসিম স্ত্রী সুমাইয়া মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে গেছে বলে বাড়ি আশপাশের লোকজনের কাছে প্রচার দিয়ে তাকে খুঁজতে থাকে। ইতোমধ্যে সুমাইয়ার মা মেয়েকে খুঁজতে একাধিকবার জসিমের বাড়িতে আসলে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে সেও শাশুড়ির সাথে সুমাইয়াকে খুঁজতে বের হয়। পরে বাড়ির লোকজনের সন্দেহ হলে তারা জসিমকে রোববার রাতে একান্তে নিয়ে চাপ প্রয়োগ করলে সে হত্যাকান্ডের বিষয়টি স্বীকার করে তাদের সহায়তা চায়। এ সময় তারা জসিমের ঘরের খাটের নিচে লাশ দেখতে পেয়ে জসিমকে আটক করে কাপাসিয়া থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জসিমকে গ্রেফতার করে এবং লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় সুমাইয়ার মা ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে কাপাসিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেফতার স্বামী জসিমউদ্দিন প্রধানকে গতকাল সোমবার বিকালে গাজীপুর আদালতে তোলা হলে সে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে। তাতে সে জানায়, ঝগড়ার এক পর্যায়ে সে স্ত্রীর গলাটিপে ধরলে কিছু বুঝে উঠার আগেই সুমাইয়ার মৃত্যু হয়। ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্ত্রী পালিয়ে গেছে বলে প্রচার করেছে। পরে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।