গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন গজারিয়া এলাকায় এক নারীকে (৪১) গণধর্ষণের পর ভিডিও ধারণের অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরে মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতার আসামীরা হলো, গাজীপুর সদর থানার গাজারিয়া এলাকার কবির হোসেনের ছেলে মোসাদ্দেক হোসেন ওরফে অপু (৩২), ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার ডিউর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে হৃদয় মিয়া (২০) এবং একই জেলার ত্রিশাল উপজেলার বিয়ারা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে নাঈম ইসলাম (১৮)।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর সিটপাড়া এলালাকায় ভাড়া বাসায় থেকে একটি পোশাক তৈরি কারখানায় নিরাপত্তাকর্মী হিসাবে চাকরি করতেন ওই নারী। দুই মাস আগে তার মা অসুস্থ হলে তিনি ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল গ্রামের বাড়ীতে মায়ের কাছে যান। পরে তার মা সুস্থ হলে কর্মস্থলে ফিরে এসে জানতে পারেন তার চাকরী চলে গেছে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি সকালে ওই নারী চাকরির সন্ধানে গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন বাংলাবাজার এলাকায় এনএজেড গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে চাকরীর বিষয়ে কথাবার্তা বলতে যান। সেখানে আলোচনা শেষে তার ভাড়া বাসায় ফেরার পথে ভাওয়াল মির্জাপুর মেইন রোডে অবস্থানকালে তিনি ক্ষুধার্ত বোধ করেন। পরে তিনি আশেপাশে হোটেল রেস্টুরেন্ট খোঁজাখুঁজি করে না পেলে অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবক (মোসাদ্দেক হোসেন ওরফে অপু) এসে তার সাথে কথা বলে। এসময় তিনি ঐ যুবককে ক্ষধার কথা জানান। তখন ঐ যুবক তাকে সদর থানাধীন উত্তর গজারিয়াপাড়া (মরদাপাড়া) এর গজারি বনের ভিতরের মার্কেটে একটি খাবারের হোটেলে আছে বলে জানায়। হোটেলে খাবার খেয়ে সকাল ১০টার দিকে তিনি গজারী বনের ভিতর দিয়ে বাসায় ফেরার পথে আশেপাশে কোন লোকজন না থাকায় মোসাদ্দেক হোসেন ওরফে অপু পিছন দিক থেকে ঐ নারীর মুখ চেপে ধরে এবং গলায় চাকু ধরে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে গজারী বনের আরও গভীরে ঝোঁপের ভিতর নিয়ে যায়। সেখানে ঐ যুবক তাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে অপু মোবাইল ফোনে কল দিয়ে আরও অজ্ঞাত ২ জন যুবককে ঘটনাস্থলে ডেকে নিয়ে আনে। তারা এসে সকাল অনুমান সোয়া ১১টা পর্যন্ত ৩ যুবক পালাক্রমে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এসময় তাদের হৃদয় মোবাইল ফোনে ধর্ষণের ঘটনাটি ভিডিও ধারণ করে। পরে আসামিরা ঘটনাটি কাউকে জানালে জীবনে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী নারী বাদী নিজে বাদী হয়ে (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০(সংশোধনী/২০০৩) এর ৯(৩) তৎসহ পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ এর ৮(১)ধারায়) একটি মামলা করেছেন। তার প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে গত সোমবার দিবাগত রাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামীদের মধ্যে হৃদয় মিয়ার মোবাইল ফোনে ধর্ষণের ভিডিও পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নারীর ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।