গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন ভোগড়া এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে লাঠিসোটা দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর ও ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগে শিবিরের ২০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে গ্রেফতার করার পর মঙ্গলবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জিএমপির উপ-কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) আবু তোরাব মো. শামসুর রহমান।
তিনি আরো জানান, সোমবার রাত ৮টার দিকে খবর পাওয়া যায়, বাসন থানাধীন ভোগড়া এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে লাঠিসোটা দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর ও ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক জামায়াত শিবিরের একদল কর্মী সমবেত হয়েছে। তারা বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমিরসহ জামায়াতে ইসলামী ও শিবির নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের ইস্যূকে কেন্দ্র করে বাসন থানাধীন ভোগড়া বাসন সড়ক সাকিনস্থ রিয়াদ ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে মহাসড়কের উপর লাঠি দিয়া এবং ইট নিক্ষেপ করে মহাসড়কে চলাচলারত গাড়ী ভাংচুর ও ককটেল ফাটিয়ে জনমনে আতংক করছে। এসময় সেখানে বাসন থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে ইসলামি ছাত্র- শিবিরের ১৯ জন নেতা-কর্মীকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে। পরে তাদের কাছ থেকে ১৪টি বাঁশের লাঠি, ২৫টি ইটের টুকরা, ৫টি লাল স্কচটেপ মোড়ানো অবিষ্ফোরিত ককটেল, ১৫ টুকরা গাড়ীর ভাঙ্গা কাচের অংশ, ৫ টুকরা বিষ্ফোরিত ককটলের অংশ বিশেষ জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাসন থানাধীন নলজানী গ্রেটওয়াল সিটি সাকিনস্থ আঃ আউয়ালের বাড়ীর ভাড়াটিয়া আসামী মোঃ মেহেদী হাসান (২৬) কে গ্রেফতার করা হয়। এসময় রুম তল্লাশী করিয়া ৪টি ব্যক্তিগত রিপোর্ট বই ১টি মলাটযুক্ত বইসহ বিভিন্ন উগ্রবাদি বই জব্দ করেন।
পরে এ ঘটনায় আসামীদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সনের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩)/২৫-উ ধারায় এবং ১৯০৮ সনের বিষ্ফোরক দ্রব্য আইন ৩/৪/৬ মামলা রুজু হয়েছে।
তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃতরা হলো, ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার মোমারিজপুর গ্রামের অলিউল্লাহর ছেলে মেহেদী হাসান (২৬), ভোলার মনপুরা উপজেলার উত্তরচর সাকুচিয়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে আমিরুল ইসলাম আফনান (১৮), টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বংশীনগর গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে জায়েদ (১৯), ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার যশোরা গ্রামের দুলাল উদ্দিনের ছেলে মেহেদী হাসান (১৯), নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার নোয়াকান্দী গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে মোবাশ্বির ইমাম (১৯), নেত্রকোনার কমলাকান্দা উপজেলার কান্দাপাড়া গ্রামের বুলবুল খানের ছেলে রাজু খান (১৮), শ্রীপুর পৌরসভার বেড়াইদেরচালা এলাকার মোবারক হোসেনের ছেলে মুজাহিদ হাসান (১৮), একই উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে খালেদ বিন হোসাইন (১৯), নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার চাটখিল গ্রামের মৃত গোলাম মওলার ছেলে মেহেদি হাসান (১৯), ভোলা সদরের চরসামাইয়া গ্রামের সামসুউদ্দিনের ছেলে জিন্নাহ (১৯), কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার পিপুইয়া গ্রামের হোসাইন পাটোয়ারীর ছেলে জোবায়ের হোসেন (১৮), চৌগাছা উপজেলার জয়িলগাড়ি গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে রাইসুল ইসলাম (১৯), সাতকানিয়া উপজেলার সাতকানিয়া গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে সাদেকুল ইসলাম (১৮), মনপুরা উপজেলার চরযতীন গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে আতাউল্লাহ আফফান (১৮), ফুলপুর উপজেলার পাগলা থানার আবু সাঈদের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত (১৮), ড্যামুডা উপজেলার ড্যামুডা গ্রামের আব্দুল মতিনের ছেলে তাওহীদ (১৬), কাপাসিয়া উপজেলার রাওনাট গ্রামের মশিউর রহমানের ছেলে রকিব (১৬), গৌরনদী উপজেলার বার্থী গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে নাঈম হোসেন (১৬), ময়মনসিংহ সদর উপজেলার কাচারিবাজার গ্রামের আসলামের ছেলে আলী আজগর (১৬) এবং চন্দ্রগঞ্জ উপজেলার বিনোদনপুর গ্রামের শামসুল আলমের ছেলে মজিবুর রহমান (২৫)। তাদের কাছ থেকে ককটেল, উগ্রপন্থী বই, চাঁদা আদায়ের রশিদ ও লাঠিসোঁটা উদ্ধার করা হয়।