গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরে বিবাহিত মেয়েকে উত্যক্ত করায় প্রতিবেশীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যার আড়াই বছর পর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় জড়িত ৩জনকে গ্রেফতার করার পর তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধি দিয়েছে।
নিহতের নাম হামিদুল ইসলাম @ রবিউল (২০)। তিনি বগুড়ার সোনাতলা থানার দিগদাইড় এলাকার মোঃ ইমদাদুল হকের ছেলে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, পটুয়াখালীর কলাপাড়া থানার চাকামহিয়া এলাকার সোহেল হাওলাদার (২৭), বগুড়ার সোনাতলা থানার পাঠানপাড়া এলাকার রতন মিয়া (২৫), একই এলাকার ইসরাফিল (৪০)।
নিহত এবং গ্রেফতার আসামীরা গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর থানার এনায়েতপুর এলাকায় ভাড়া থেকে স্থানীয় পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন।
বুধবার গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এসব তথ্য জানান।
তিনি আরো জানান, নিহত রবিউল মাঝেমধ্যে রাতে ভাড়াবাসা সংলগ্ন অটোরিকশা গ্যারেজে গিয়ে তাদের ওয়াইফাই ব্যবহার করতো রবিউল। ২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে ওই গ্যারেজে যায় রবিউল। রাত ৩টার দিকে তার মা রবিউলকে রুমে না পেয়ে ওই গ্যারেজে গিয়ে আড়ার সাথে রশি দিয়ে রবিউলকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। তখন রবিউলের মা চিৎকার দিলে আশেপাশের লোকজন এসে তার ছেলেকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নিচে নামায়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। এ ব্যাপারে কাশিমপুর থানার অপমৃত্যু মামলা করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মামলাটি তদন্তকালে ২০২১ সালের ২০ জুন ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে এটিকে হত্যাকান্ড বলে উল্লেখ করা হলে হত্যা মামলা রুজু হয়। কাশিমপুর থানা পুলিশ ১০ মাস তদন্ত শেষে মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করতে না পেরে চূড়ান্ত রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেন। আদালত চূড়ান্ত রিপোর্ট পর্যালোচনা করে স্ব-প্রণোদিত হয়ে মামলাটি পিবিআই গাজীপুর জেলাকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন। পরে পিবিআই মামলার তদন্ত শুরু করে। এক পর্যায়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে কাশিমপুরের পূর্ব এনায়েতপুর সবুজ কানন বাজার এলাকা থেকে ওই ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার আরো জানান, গ্রেফতারকৃতরা ও ভিকটিম পূর্ব এনায়েতপুর এলাকায় একই বাড়িতে পাশাপাশি কক্ষে স্বপরিবারে বসবাস করতেন। রবিউল গ্রেফতার ইসরাফিলের বিবাহিত কন্যাকে উত্যক্ত করতো। বিষয়টি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বাদানুবাদ হয়। মেয়ে সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য ইসরাফিল ভিকটিমকে হত্যা করার পরিকল্পা করে। পরে ঘটনার রাতে সহযোগিদের নিয়ে ইসরাফিল গলায় রশি পেচিয়ে রবিউলকে মারধর করে। রবিউল অচেতন হয়ে পড়লে গ্যারেজের আড়ার সাথে রবিউলকে ঝুলিয়ে রেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।ৎ
তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃতদের আদালতে হাজির করা হলে তারা নিজেদের ঘটনায় সঙ্গে জড়িত বলে মঙ্গলবার আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। পরে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়।