গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের কালিয়াকৈর বন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামী গ্রেফতার ও হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাব-১।
নিহতের নাম রিয়াদ হোসেন (২১)। তার গ্রামের বাড়ী দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী থানাধীন পশ্চিম নারায়নপুর। তিনি রাজধানীর মিরপুর প্রাইম ইউনিভার্সিটির ছাত্র।
গ্রেফতার আসামীর নাম মোঃ নাঈম হোসেন (৩৪)। তিনি দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী থানাধীন পশ্চিম নারায়নপুর গ্রামের ইন্তাজুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ জানায়, রিয়াদ হোসেন গত ১২ জুন নিখোঁজ হয়। নিখোঁজ হওয়ার পর রিয়াদের পরিবার গাজীপুর মহানগহর সদর থানায় জিডি করে। গত ১৬ জুন রাতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানাধীন রতনপুর ধোপাচালা এলাকার বনের ভিতর ফাঁকা জায়গা থেকে রিয়াদ হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে এ সংক্রান্তে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়।
র্যাব-১ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার) মোঃ পারভেজ রানা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার পর এই হত্যাকান্ডের রহস্য উম্মোচনের জন্য র্যাব-১ এর আভিযানিক দল ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং আসামী গ্রেফতারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
তিনি আরো জানান, এরই অংশ হিসাবে গত ১৭ জুন রাতে র্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল তথ্য-প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন মাদনপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এসময় চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও প্রধান আসামী মোঃ নাঈম হোসেনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী নাঈম হোসেন ভিকটিম রিয়াদকে হত্যার কথা স্বীকার করে এবং এই চাঞ্চল্যকর হত্যার লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দেয়। পরে তার দেয়া তথ্যমতে ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী শফিপুর আন্দারমানিক পূর্ব পাড়া এলাকার একটি ড্রেন হতে রিয়াদ হোসেনের ব্যবহৃত ১টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের ঐ কর্মকর্তা জানান, আসামী নাঈম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, নিহত রিয়াদ হোসেন এবং ধৃত আসামী দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী থানাধীন পশ্চিম নারায়নপুর নামক একই গ্রামের বাসিন্দা। ধৃত আসামী রিয়াদের দূর সম্পর্কের চাচা। ধৃত আসামী গত ২০১৯-২০২১ সাল পর্যন্ত সৌদি আরব প্রবাসী ছিল। বিদেশে থাকাকালে আসামীর স্ত্রীকে (রিয়াদের চাচীকে) দেখাশোনা করার সময় রিয়াদের সাথে চাচীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক হয় বলে আসামী নাঈম হোসেনের সন্দেহ হলে তিনি দেশে চলে আসেন। ধৃত আসামী প্রতিশোধ নিতে রিয়াদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এজন্য তিনি ৫০ হাজার টাকায় ভাড়াটে খুনী ঠিক করেন।
তিনি আরো জানান, হত্যার পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ধৃত আসামী গত ২০২২ সালের জুন মাসে তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দিনাজপুর হতে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। পরে রিয়াদের সাথে যোগাযোগ করে। পরে গত ১৩ জুন রিয়াদকে তার মেস থেকে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে আসতে বলে। গত ১৩ জুন রাত পৌনে ২টার দিকে ধৃত আসামী ও ভাড়াটে খুনী রিয়াদকে সাথে নিয়ে কালিয়াকৈরের রতনপুর ধোপাচালা এলাকার বনের ভিতর চলে আসে। সেখানে ভাড়াটে খুনী রিয়াদকে হত্যা করতে অস্বীকার করলে আসামী নাঈম হোসেন নিজেই রিয়াদকে পরিহিত টি-শার্ট খুলে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে পালিয়ে যায়।
মন্তব্য