গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরীর পুবাইল থানা এলাকায় ডোবার পানিতে শিশু ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় পুলিশ এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার যুবক আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্ধি দিয়েছে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নিহত শিশু ছাত্রীর নাম নুপুর আক্তার (০৮)। সে গাজীপুর মহানগরীর পুবাইল থানাধীন মাজুখান (বাঘেরটেক) এলাকার আবুল হোসেনের মেয়ে। সে স্থানীয় হলি কোরান মাদ্রাসার ছাত্রী ছিল। তার পিতা আবুল হোসেন (৪৫) পেশায় রাজমিস্ত্রী)।
গ্রেফতার আসামীর নাম মোঃ আব্দুল্লাহ ফকির ওরফে আব্দুল্লাহ (২০)। তিনি বাঘেরহাট জেলার মোল্লারহাট থানার কাচনা গ্রামের আব্দুল আলীম ফকিরের ছেলে। তিনি মহানগরীর পুবাইল থানাধীন মাজুখান পশ্চিমপাড়া এলাকায় পিতা মাতার সাথে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
স্বজন ও স্থানীয়রা জানায়, শিশু ছাত্রী নুপুর আক্তার ১২ জুলাই বেলা ১টার দিকে বাসা থেকে দোকান থেকে আইসক্রিম কিনে খাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। দীর্ঘ সময় পরেও বাসায় না ফেরায় নুপুর আক্তারের পরিবারের লোকজন আশপাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পায়নি। পরের দিন ১৩ জুলাই সকাল ১০টার দিকে মাজুখান সাকিনস্থ বাঘেরটেক জনৈক দেলোয়ার হোসেনের বাড়ীর পার্শ্বে গাছ বাগান সংলগ্ন ডোবার পানিতে ভাসমান ভাসমান অবস্থায় নুপুর আক্তারের লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় ১৪ জুলাই শিশুটির পিতা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে পূবাইল থানায় হত্যা মামলা দয়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১২ জুলাই (বুধবার) দুপুর ১টার দিকে নূপুর আক্তার আইসক্রিম খেতে বাসা থেকে বের হয়। এরপর সে আর বাড়ি ফেরেনি। পরবর্তীতে আশপাশের এলাকায় খোঁজ করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরদিন ১৩ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় বাঘেরটেক এলাকায় একটি ডোবার পানিতে ভাসমান অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে নিখোঁজ নূপুরের বাবা আবুল হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে শনাক্ত করেন এটি তার মেয়ে নূপুর আক্তারের লাশ।
জিএমপির পুবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, মামলা দায়ের করার পর পূবাইল থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে ঘটনায় জড়িত ও তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ১৫ জুলাই ভোরে পূবাইল থানাধীন মাজুখান এলাকা হতে মোঃ আব্দুল্লাহ ফকির ওরফে আব্দুল্লাহকে গ্রেফতার করে।
তিনি আরো জানান, গ্রেফতারের পর আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আসামী স্বীকার করে যে, ঘটনার দিন নুপুর আক্তার, প্রতিবেশী মরিয়ম (১৩) ও আসামী আব্দুল্লাহ সকলেই বাসার পাশের ডোবার পানিতে বেলা ২টার দিকে গোসল করতে নামে। মরিয়ম গোসল শেষে নিজ বাসায় চলে যায়। কিন্তু আসামী আব্দুল্লাহ ও নুপুর আক্তার ডোবার পানিতে গোসল করতে থাকে। এসময় আশপাশ নির্জন হওয়ায় গোসল করার একপর্যায়ে আসামী আব্দুল্লাহ, নুপুর আক্তারকে ডোবার পাড়ে এনে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণ করা অবস্থায় ডোবার অপর প্রান্ত দিয়ে মানুষ চলাচলের সাড়াশব্দ পাওয়ায় আসামী আব্দুল্লাহ, নুপুর আক্তারকে ডোবার পানিতে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরের দিন নুপুর আক্তারের মরদেহ ডোবার পানিতে ভেসে ওঠে।
তিনি আরো জানান, ১৫ জুলাই তাকে আদালতে হাজির করা হলে বিজ্ঞ আদালতে আসামী আব্দুল্লাহ ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। পরে তাকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।