গণবাণী ডট কম:
জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের (এফএও) আয়োজনে খাদ্য ব্যবস্থাপনা শীর্ষ সম্মেলন+২ স্টকটেকিং সম্মেলনে যোগ দিতে তিন দিনের সফরে ইতালির রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (২৩ জুলাই) ভোরে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী।
আগামী ২৪ থেকে ২৬ জুলাই ইতালির রোমে এফএওর আয়োজনে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। জাতিসংঘের মহাসচিবের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল এ ফোরামে যোগ দেবেন। রোম সফরে দেশটির সঙ্গে দুটি সমঝোতা স্মারক সই করবে বাংলাদেশ।
বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী মাহবুব আলী, মন্ত্রী পরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান, পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা।
গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, সফর শেষে আগামী ২৬ জুলাই শেখ হাসিনা ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন।
ইতালির রোমে ২৪-২৬ জুলাই ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও)’র সদর দফতরে ‘মানুষ, পৃথিবী ও সমৃদ্ধির জন্য টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা: একটি যূথযাত্রায় বিভিন্ন পথ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ইউএনএফএসএস+২ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গণমাধ্যমকে জানান, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী কাতার এয়ারওয়েজের একটি নিয়মিত বাণিজ্যিক ফ্লাইট আজ ভোর ৫টা ৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রা করে।
কাতারের দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায় এক ঘন্টা যাত্রা বিরতির পর স্থানীয় সময় দুপুর ২ টা ৫ মিনিটে (বিএসটি সময় ০৬.০৫) বিমানটির ইতালির রোম ফিউমিসিনো বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থাপনা+২ স্টকটেকিং মোমেন্ট (ইউএনএফএসএস+২) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ২০ জুলাই এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে ‘শক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা’ ও সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি’ এই দুটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হতে পারে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ২৪ জুলাই এফএও সদর দফতরে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বক্তা হিসেবে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
ফোরামে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার প্রধান, কৃষি বিশেষজ্ঞ, খাদ্য উৎপাদনকারী, বিজ্ঞানী, গবেষক এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা উপস্থিত থাকবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর প্রধানমন্ত্রী ‘ফুড সিস্টেম অ্যান্ড ক্লাইমেট অ্যাকশন’ শীর্ষক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে অংশ নেবেন।
একই দিন সন্ধ্যায় তিনি এফএও সদর দপ্তরে বাংলাদেশ-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
জাতিসংঘের এফএও এর মহাপরিচালক কু ডংইউ এবং ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড অফ এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্টের (আইএফএডি) প্রেসিডেন্ট আলভারো লারিও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ২৫ জুলাই ইউরোপের ১৫টি দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদেও নিয়ে আয়োজিত ‘আঞ্চলিক দূত সম্মেলনে’ যোগ দেবেন।
এছাড়া শেখ হাসিনার ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করার কথা রয়েছে এবং সেখানে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।
তিনি ইতালিতে প্রবাসী বাংলাদেশি আয়োজিত একটি কমিউনিটি রিসেপশনেও যোগ দেবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, কৃষিমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র্র মজুমদার, সংসদ সদস্যগণ এবং সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে ইউএনএফএসএস+২-এ যোগ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রীর ২৬ জুলাই স্বদেশের উদ্দেশে রোম ত্যাগের কথা রয়েছে।
গত ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর এ অনুষ্ঠিত ‘জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থাপনা শীর্ষ সম্মেলনে’ গৃহীত সুপারিশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করার লক্ষ্যে ইউএনএফএসএস+২ এর যাত্রা শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালে ‘জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থাপনা শীর্ষ সম্মেলনে’ ভার্চুয়ালি যোগ দেন এবং পাঁচ দফা সুপারিশ প্রস্তাব পেশ করেন।