গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের ধীরাশ্রম এলাকায় মিনিস্টার মাইওয়ান কারখানায় আগুনে ১শ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কারখানার চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক খান রাজ। তিনি শনিবার সকালে কারখানা প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানান আগুনে কারখানার ভিতরে রক্ষিত আগুনে কারখানার বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন প্রকারের ফ্রিজ, এলইডি টিভি, হোম অ্যাপ্লায়েন্সসহ বিভিন্ন মালামালসহ অন্যান্য মুল্যবান মালামাল পুড়ে গেছে। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডটি বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে দাবি করেছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।
সংবাদ সম্মেলনে কারখানার চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক খান রাজ বলেন, অগ্নি নিরাপত্তাসহ আগুন নেভানোর সকল সরঞ্জাম কারখানায় বিদ্যমান ছিল। যেহেতু এই প্রতিষ্ঠান সকল মালামাল প্লাস্টিক জাতীয় সে কারণে অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম থাকা সত্ত্বেও আগুন ব্যাপক আকার লাভ করে। এবং বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রাথমিকভাবে অগ্নিকাণ্ড টি বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে তবে বিস্তারিত তদন্তের পর বলা যাবে। আগুনে বিভিন্ন মালামাল পুড়ে কারখানার ১০০ কোটি টাকার মতো। আমি এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী সহ সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
এসময় তিনি বলেন, কারখানায় ফায়ার সার্টিফিকেট, ভবনের কাগজপত্র, পরিবেশ ছাড়পত্রসহ আনুষঙ্গিক সকল কাগজপত্র তার সঠিক রয়েছে। কারখানায় পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কারখানার আগুন পর্যাপ্ত সরঞ্জামাদি ছিল। এসময় তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন ফায়ার সার্ভিসের ১৬ টি ইউনিট ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে এতে বোঝা যায় আগুনের ভয়াবহতা কত ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময় তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এ সময় তিনি বলেন, আগুন লাগার পর সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে থেকে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ সবাই তাকে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। এজন্য তিনি সকলের নিকট ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি যাতে ক্ষতি পুষিয়ে আবার কারখানাটিকে দাঁড় করাতে পারেন তার জন্য তিনি সকলের দোয়া এবং সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি জানান, কারখানার ১২৩ কোটি টাকার বীমা রয়েছে, আর এই আগুনে ক্ষতি হয়েছে কমবেশি ১শ কোটি টাকার মতো। কারখানাটি সংস্কার মেরামত করার জন্য এবং তদন্ত কাজের সুবিধার জন্য আগামী তিনদিন কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন কারখানার পরিচালক অর্থ মুজিবুর রহমান পরিচালক ফ্যাক্টরি অপারেশন হাজী গোলাম মোস্তফা খান।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার ২০ মিনিটে কারখানার ছয়তলা ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের ১৬ টি ইউনিট ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য শামসুন্নাহার ভূইয়া, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ্যাড. মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেন, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস.এম. তরিকুল ইসলাম। এছাড়া জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, র্যা বসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ।
আগুন লাগার ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল্লাহকে (অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ভারপ্রাপ্ত) প্রধান করে জেলা প্রশাসনের পক্ষথেকে ৬ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি ঘটন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত কর্ম দিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।