গণবাণী ডট কম:
আহা কি ফুটফুটে সুন্দর এবং নিস্পাপ ১টি শিশু। শিশুটির জন্ম হয়েছে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেরর প্রস্রুতি ওয়ার্ডে। শিশুটির মা একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। সন্তান জন্মদানের কয়েক ঘন্টা পর মানসিক প্রতিবন্ধী মা হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। পরে একদিন এসে শিশুটিকে বুকের দুধ পান করিয়ে আবার চলে যান। পরে আর ফিরে আসেননি। অবশেষে ২২ দিন পর শিশুটির ঠাই হয়েছে রাজধানীর আজিমপুরে সমাজসেবা অধিদপ্তরের ছোট্ট মনি নিবাসে।
গাজীপুর সমাজসেবা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শিশুটির মানসিক প্রতিবন্ধী মা লিপি (৩০) গত ২৭ জুলাই প্রচন্ড প্রসব বেদনায় কাতর হয়ে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রবেশ করে। পরে উপস্থিত হাসপাতালের লোকজন তাকে পরীক্ষা করে মা ও শিশু ওয়ার্ডে নিয়ে যায়। সেখানে ২৮ জুলাই ঐ ফুটফুটে সুন্দর এবং নিস্পাপ শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়। কয়েক ঘন্টা পর মানসিক প্রতিবন্ধী মা শিশুটিকে হাসপাতালে রেখেই হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যায়। পরে অনেকদিন মানসিক প্রতিবন্ধী মায়ের কোন খোঁজ ছিল না। মানসিকভাবে অসুস্থ হবার কারণে তিনি শিশুটিকে দেখতে আর শিশুর কাছে আসেননি। হঠাৎ ২ আগস্ট একদিন হাসপাতালে এসে শিশুকে মানসিক প্রতিবন্ধী মা বুকের দুধ পান করিয়ে আবার হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। তারপরে আর ফিরে আসেননি।
সূত্র আরো জানায়, এমন অবস্থায় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ও গাজীপুর সমাজসেবা অধিদপ্তর শিশুটির পরিচর্যা করেন। জন্মের পর থেকেই হাসপাতালের নার্স, আয়াসহ সকলেই পরম মমতায় মানসিক প্রতিবন্ধী মায়ের গর্ভে জন্ম নেয়া পিতৃ পরিচয়হীণ শিশুটির পরিচর্যা করেন, যেন শিশুটি স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে। সমাজসেবা বিভাগ শিশুটির প্রয়োজনীয় পোশাক পরিচ্ছদ ও অন্যান্য জিনস সরবরাহ করে। শিশুটির মা হয়ত জানেও না কে তার সন্তানের পিতা। আর এ মায়ের পক্ষে শিশুটির দায়িত্ব নেয়াও সম্ভব নয়।
গাজীপুর সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক এস এম আনোয়ারুল করিম জানান, শিশুটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য বিষয়টি গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামকে জাননো হয়। পরে তিনি গাজীপুর জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভা আহবান করেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, যেহেতু শিশুটির মা মানসিকভাবে অসুস্থ এবং তার পিতার কোন পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ২০১৩ সালের শিশু আইনের ৮৫ ও ৮৬ ধারার আলোকে শিশুটিকে রাজধানীর আজিমপুরে সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত ছোট্ট মনি নিবাসে পাঠানো হবে। পরে শিশুটিকে পুলিশের মাধ্যমে সেখানে শনিবার দুপুরে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
তিনি আরো বলেন, শিশুটি ছোট্র মনি নিবাসে থাকলে ভবিষ্যতে যদি মা সুস্থ হয়, তাহলে তিনি তার সন্তান ফিরে পাবেন। তাছাড়া সমাজের অন্য কোন দায়িত্ববান ব্যক্তি যদি শিশুটির দায়িত্ব নিতে চান, তাহলে আইনী প্রক্রিয়া অবলম্বন করে নিতে পারবেন।