গণবাণী ডট কম:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-৩ সংসদীয় আসনের ভোট গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ শুক্রবার শুরু হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন গাজীপুর জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটাণিং কর্মকর্তা আবুল ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।
প্রশিক্ষণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন. গাজীপুর পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ এইচ এম কামরুল হাসান।
মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী সরকারি কলেজ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গাজীপুর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আপনি কী করতে পারবেন আর কী করতে পারবেন না, নির্বাচন কর্মকর্তা বিশেষ বিধান আইন, ১৯৯১ বলা হয়েছে। এই আইনে আটটি ধারায় পরিষ্কার করে বলা হয়েছে। এখানে খুব স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে, নির্বাচনের কাজে যুক্ত হওয়ার পর আপনার-আমার অন্য কোনো কাজ করা যাবে না। সাংঘর্ষিক কোনো কাজ করা যাবে না।’
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘আপনাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারে সতর্ক থাকবেন। রাষ্ট্রের বৃহৎ স্বার্থে আপনাকে দক্ষতা সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সকাল ৭টার মধ্যে ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার পৌঁছে দেওয়া হবে। নারী সহকর্মীদের বিষয়ে বিশেষ খেয়াল রাখবেন। নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে আপনি সর্বোচ্চ কর্মকর্তা ক্ষমতাধর ব্যক্তি। ক্ষমতাধর এই কারণে বলা হচ্ছে, নির্বাচনের দিন আপনার সিদ্ধান্ত সঠিক হবে। কঠোর পদক্ষেপ নিতে কোনো সময় পিছপা হবেন না।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অনেক ধরনের আশঙ্কা করছি, বিশেষ করে একটি দল নাশকতার পরিকল্পনা করতে পারে, আপনারা তাদের বিষয়ে বাড়তি সতর্ক থাকবেন, যাতে করে তাদের সঠিক জবাব দিতে পারেন। ব্যালট পেপার আপনার হেফাজতে রাখবেন। ভোট গ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত পোলিং এজেন্ট ও আপনার ভোট গ্রহণ সহকারীদের মোবাইল ফোন আপনার কাছে জমা রাখবেন।’
ভোট গ্রহণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশে গাজীপুর জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম বলেন,অবৈধভাবে কেউ ব্যালট পেপারে হাত দিলে তাদের হাত পুড়ে যাবে। অপরাধের চেয়ে শাস্তি হবে কয়েক গুণ বেশি। আপনাদের ভয়ের কারণ নেই। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব সময় আপনাদের পাশে আছি। আপনাদের শরীরে হাত দিলে আমরা বসে থাকব না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একবিন্দু ছাড় দেবে না।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, ‘যারা অবৈধভাবে ব্যালট পেপারে হাত দেবে অথবা আপনাদের শরীরে হাত দেবে, তার জন্য কী ধরনের শাস্তি হবে, কী রকম শাস্তি হবে, তা তারা ভালোভাবে জানে। তাই আপনাদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। একটি নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নির্ধারণের মাধ্যম। নির্বাচনের যত আয়োজন, সবাই নীতির মধ্যে দায়বদ্ধ। আমরা সবাই নীতির ক্ষেত্রে দায়বদ্ধ। আমার স্রষ্টা সব দেখেন, আমি কী করছি। আমরা, আপনারা সবাই ওয়াদাবদ্ধ একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিতে। আপনারা নির্ভয়ে আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব সময় আপনাদের পাশে থাকবে।’
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন,গাজীপুর জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর সার্কেল) আজমীর হোসেন,উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: আল মামুন,উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আল নোমানসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।