নিজস্ব প্রতিবেদক, কাপাসিয়া (গাজীপুর) :
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ৪ লাখ মানুষের চিকিৎসার ভরসাস্থল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এক বছর ধরে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাক সংকটে রয়েছে। ২০২০ সালে জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সটিতে চিকিৎসক পদায়ন করে তাদের অন্যত্র ডেপুটেশনে নিয়োগ করায় এ সংকট তৈরী হয়েছে। এতে কাংখিত চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলাবাসী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলির মধ্যে অন্যতম একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এটি। ২০২০ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রী কর্তৃক এটি জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। জনবাল কাঠামো অনুযায়ী এখানে চিকিৎসক পদায়ন করে পরে এখান থেকে জেলার বিভিন্ন কারাগারে চিকিৎসকদের ডেপুটেশনে নিয়োগ দেয়া হয়। যার ফলে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ডাক্তার সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে এখানে ১৭ জন চিকিৎসকের মধ্যে এ হাসপাতালে কর্মরত আছেন মাত্র সাতজন। নিয়োগ থাকলেও এখানে চিকিৎসা সেবা দেন না ১০জন চিকিৎসক। এ কারণে রোগীদের চিকিৎসা সেবা পেতে বেড়েছে ভোগান্তি। কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন অনেকেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সূত্রে তথ্য থেকে জানা যায়, কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সটি কাপাসিয়াবাসীর চিকিৎসা লাভের সবচেয়ে বিস্বস্ত প্রতিষ্ঠান। এখানে প্রতিদিন গড়ে বহির্বিভাগে ৭ শত থেকে ৮ শত জন রুগী আসেন। বেড অকুপেন্সি রেট সব সময়ই শতভাগের উপর থাকে। বিগত কয়েক বৎসর ধরে ইউজার ফি প্রদানে এই স্বাস্থ্য কমেপ্লক্স সারাদেশে উপজেলা গুলির মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করে আছে। কিন্তু সম্প্রতি প্রয়োজনীয় মেডিকেল অফিসার এবং জুনিয়র কনসালটেন্ট না থাকায় স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সটিতে সেবার মান কমে যাচ্ছে। অনেক দিন যাবত এই স্বাস্থ্য কমেপ্লক্স ৬জন চিকিৎসক গাজীপুরের বিভিন্ন কারাগারে প্রেষণে কর্মরত রয়েছেন এবং এই স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সের একজন চিকিৎসক (মেডিসিন কনসালটেন্ট) ডিএনসিসি হাসপাতালে প্রেষণে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সটিতে অর্থোপেডিক্স কনসালটেন্ট ও ইএনটি কনসালটেন্ট নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো. মামুনুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সটিতে সেবা কার্যক্রম মানসম্মত রাখতে হলে জরুরী ভিত্তিতে শূন্য পদগুলোতে কনসালটেন্ট (অর্থপেডিক্স কনসালটেন্ট ও ইএনটি কনসালটেন্ট) পদায়ন জরুরী এবং প্রেষণে কর্মরত ৬জন মেডিকেল অফিসারের প্রেষণাদেশ বাতিল করা খুবই প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, চলতি বছরের মার্চ মাসে অত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে আরো তিন জন চিকিৎসক কোর্সের জন্য প্রেষণে চলে যাবেন। তখন সংকট আরো তীব্র হবে। এই চিকিৎসালয়ের গুণগত মান ধরে রাখতে চিকিৎসক সংকট দূর করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও গাজীপুর সিভিল সার্জন মহোদয়কে অবহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা: মাহমুদা আখতার বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত আছি। আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন চিকিৎসক সংকট দূর করা যায়। এই বিষয়টি নিয়ে আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করেছি। আশা করছি খুব শীগ্রই চিকিৎসক সংকট দূর হবে।