গণবাণী ডট কম:
‘এক দেশ, এক ভাষা’ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র দেওয়া বক্তব্যে প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধিজীবীরা। রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রের ৫০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সোমবার সারা বাংলার মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন বাংলা ভাষার অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে।
শনিবারই অমিত শাহ পুরো ভারতের জন্য একটি সাধারণ ভাষা হিসেবে হিন্দির নাম প্রস্তাব করেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ‘হিন্দিই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ভাষা। এ ভাষা সকলকে এক করতে সাহায্য করবে।’ তার এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই সোমবার ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন পশ্চিমবঙ্গের ৫০ জন বুদ্ধিজীবী। ওই পোস্টে তারা সকলের প্রতি আহ্বান জানান, বাংলা ভাষাকে তাদের জীবন থেকে সরিয়ে দেয়ার যেকোনো প্রয়াসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে যেন সবাই শামিল হন। এই বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ছিলেন কবি সুবোধ কুমার, কবি বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, আবৃত্তিকার ঊর্মিমালা বসু ও জগন্নাথ বসু, স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য।
কৌশলে প্রতিবাদে শামিল হতে জোর দিয়ে তারা পোস্টে বলেন, ‘একদিন এমন সময় আসবে , আমাদের প্রাণের ভাষা বাংলাকে বিপন্ন হতে হবে।’ সুবোধ সরকার নিজের আরও একটি স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘হিন্দিকে আমি সম্মান করি। কিন্তু একইসাথে কন্নড়, মালয়ালি, মারাঠি, কোংকনি, এবং দেশের অন্যান্য সব ভাষাকেও সম্মান করি। কোন ভাষা ছোট বা বড় হয় না। ভারত বহু ভাষার দেশ। আমাদের মনে রাখতে হবে, মাতৃভাষা হচ্ছে আসল রেশন কার্ড।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘মানুষের সব সময়ই উচিত সব ভাষা ও সংস্কৃতিকে সম্মান করা। কিন্তু কখনই তা নিজের মাতৃভাষার মূল্যে না।’
এদিকে অমিত শাহর ‘এক দেশ এক ভাষা’ নিয়ে প্রতিবাদ চলছে রাষ্ট্রের অন্যান্য অংশেও। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ নিয়ে একাধিক স্ট্যাটাস সর্বসমক্ষে আসার পর থেকেই ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের জনগণ একে হিন্দি আগ্রাসন বলে দাবি করছেন। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, ডিএমকে প্রধান এমকে স্টালিন, কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারাস্বামী প্রমুখ ব্যক্তিবর্গও অমিত শাহর বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন।