গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পূর্বেই নির্বাচনি প্রচারণা শুরুর অভিযোগে মনোনয়ন দাখিলকারী ৩ প্রার্থীকে শোকজ করা হয়েছে। নির্বাচনের রিটার্ণিং কর্মকর্তা মঙ্গলবার পৃথক চিঠিতে তাদের শোকজ করেছেন।
শোকজ পাওয়া প্রার্থীরা হলেন, কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দাখিলকারী আশরাফি মেহেদী হাসান, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দাখিলকারী মোজাম্মেল হক ও মহিলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দাখিলকারী শর্মিলী দাস।
এই তিন প্রার্থীকে গাজীপুরের কালীগঞ্জ আসনের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী সংসদ সদস্য আখতারউজ্জামান সমর্থন করেছেন। তারা উপজেলা নির্বাচনে আখতারউজ্জামানের প্যানেল হিসাবে ইতিমধ্যেই পরিচিতি পেয়েছেন।
গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের রিটার্ণিং কর্মকর্তা এ এইচ কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত উক্ত ৩ প্রার্থীকে লেখা পৃথক চিঠির বিষয়ে বলা হয়েছে, উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন-২০২৪ উপলক্ষে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে কারণ দর্শানো প্রসঙ্গে।
চিঠির পরের অংশে লেখা, উপর্যুক্ত বিষয়ের প্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন-২০২৪ উপলক্ষে চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থী (মনোনয়নপত্র দাখিলকারী) হিসেবে আপনি (প্রার্থীর নাম) প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পূর্বেই নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করে মোটর সাইকেল ও গাড়ী বহরসহ শোভা যাত্রা করেছেন মর্মে ভিডিও ক্লিপিংসহ তথ্যাদি পাওয়া গেছে। আপনার জনসভায় গাজীপুর ৫ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব আখতারউজ্জামান উপস্থিত ছিলেন যা উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ অনুসারে বিধি ৫(১) এবং বিধি ২২(১) এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
চিঠিতে উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ৫(১) এবং বিধি ২২(১) তুলে ধরা হয়েছে। এ বিধিতে আছে, কোন প্রার্থী বা তাহার পক্ষে কোন রাজনৈতিক দল, অন্য কোন ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০১৩ এর বিধি ২২ এর অধীন প্রতীক বরাদ্দের পূর্বে, জনসংযোগ এবং ডিজিটাল বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্বাচনি প্রচার ব্যতীত, অন্য কোন প্রকারের নির্বাচনি প্রচার শুরু করিতে পরিবে না। বিধি ০৫(১)।
সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং কোন সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্বাচন পূর্ব সময়ে নির্বাচনি এলাকায় প্রচারণায় বা নির্বাচনি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন না;
তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার ভোটার হইলে তিনি কেবল তাহার ভোট প্রদানের জন্য ভোটকেন্দ্রে যাইতে পারিবেন। বিধি ২২(১) উক্ত বিধিমালার বিধি ৩২ অনুসারে কোন প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি নির্বাচন পূর্ব সময়ে এই বিধিমালার কোন বিধান লঙ্ঘন করলে অনধিক ৬ (ছয়) মাস কারাদন্ড অথবা অনধিক ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন এবং বিধি ৩৩ অনুসারে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রার্থিতা বাতিলের বিধান উল্লেখ রয়েছে।
চিঠির শেষে বলা হয়েছে, বর্ণিতাবস্থায়, উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধিদ্বয়ের অনুসারে কেন আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে বিষয়ে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিম্নস্বাক্ষরকারী নিকট কারণ দর্শানোর জন্য বলা হলো।
শোকজের বিষয়ে জানার জন্য কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দাখিলকারী আশরাফি মেহেদী হাসানের যোগাযোগ করলে, তিনি চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে, অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, মাননীয় সংসদ সদস্য মহোদয় তার পূর্ব নির্ধারিত একটি ক্রীড়া অনুষ্ঠানে যোগদান করতে এলাকায় এসেছিলেন। একজন এমপি এলাকায় আসলে তার সাথে পুলিশ প্রটোকল থাকে, কর্মী সমর্থকরা থাকেন। চলার পথে তারাও সাথে চলেন। আমরা সেই অনুষ্ঠানে সৌজন্য সাক্ষাত করতে গিয়েছিলাম। অনুষ্ঠানের কোথাও আমাদের নাম ছিল না। অনুষ্ঠানের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক ছিল না। সেখানে নির্বাচনী প্রচারণার কোন কিছুই ছিল না। আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ সঠিক নয়।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সংসদ সদস্যরা তো সরাসরি যুক্ত হতে পারেন না। সিনিয়র নেতৃবৃন্দ আমাদের সমর্থন দিয়েছেন।