গণবাণী ডট কম:
গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হলেও শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস না ছেড়ে রবিবার চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন করে। তবে বহিরাগতদের হামলা ও উপাচার্যের অনুসারী শিক্ষকদের নানা ধরনের হুমকি-ধমকির প্রেক্ষিতে ছাত্রদের মধ্যে ভীতি-আতঙ্ক দেখা গেছে।
চারদিকে নানামুখী সমালোচনা আরম্ভ হলে গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হলে বিদ্যুত্ ও পানি সরবরাহ পুনরায় শুরু করে। কিন্তু হলের ডাইনিং এখনো বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের খাবার খেতে সমস্যা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা শহরে গিয়ে কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে আন্দোলনে রয়েছে। গতরাত ৯টার দিকেও তুমুল বৃষ্টির মধ্যে ছাতা নিয়ে হাজার খানেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করছিল।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের ওপর উপাচার্যের অনুসারী বহিরাগতদের হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন উপাচার্য খোন্দকার নাসিরউদ্দিন। ঘটনার একদিন পর উপাচার্যের স্বাক্ষর সম্বলিত এক নোটিশে বলা হয়, হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিত্সার ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ ফান্ড থেকে বহন করা হবে। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী পাঁচ কর্মদিবসে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
হামলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কেউ কোনো গন্ডগোল করবেন না, ওরা আমার সন্তান। কেউ নাশকতা করার জন্য শিক্ষার্থীদের ওপর এ হামলা করে থাকতে পারে। আমি শিক্ষার্থীদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে করণীয় নিয়ে জেলা প্রশাসন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল ছাত্রদের আন্দোলন থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানালেও তারা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
রবিবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধূরী এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেন।
মাহাবুব আলী খান বলেন, আমাদের এমপি সাহেব ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও হাইকমান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আমাদের নির্দেশ দিয়ে পাঠিয়েছেন। আমরা অনুরোধ রাখব তোমরা একটি আলটিমেটাম দিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করবে।
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার জানান : আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ ও বশেমুরপ্রবির প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। দুই পক্ষই ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করে।