গণবাণী ডট কম:
যুক্তরাজ্যের এসেক্সে একটি লরির ভেতরে ৩৯ জনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতের দিকে লন্ডনের পূর্ব দিকে এসেক্স কাউন্টির গ্রেজ শহরের কাছে ওয়াটারগ্লেড ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে এসব মৃতদেহ পাওয়া যায়। তারপরই অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস থেকে পুলিশ ডাকা হয়।
এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে ২৫ বছর বয়সী লরির চালককে আটক করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, তিনি উত্তর আয়ারল্যান্ডের বাসিন্দা।
এসেক্স পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে তারা মনে করছে যে তাদের মধ্যে ৩৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক ও একজন কিশোর।
কর্মকর্তারা বলছেন, লরিটি বুলগেরিয়া থেকে আয়ারল্যান্ড হয়ে এসেছে এবং শনিবার হলিহেড দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছে।
নিহতদের পরিচয় সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি। তবে পুলিশ এখন মৃতদেহগুলোকে সনাক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা বলছেন, এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া।
লরিটির মধ্যে জীবিত কাউকে পাওয়া গেছে কিনা তা পুলিশ বলে নি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল বলছেন, এরকম একটি ট্র্যাজিক ঘটনায় তিনি অত্যন্ত শোকাহত ও স্তম্ভিত।
ব্রিটেনে এ ধরণের ঘটনা আগেও ঘটেছে। ন’বছর আগে ২০০০ সালের জুন মাসে ডোভারে একটি লরির ভেতর থেকে ৫৮ জন চীনা অভিবাসীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। দুজনকে পাওয়া যায় জীবিত অবস্থায়।
ওই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায়ে এক বছর পরেই একজন ডাচ লরি চালককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
কোন পথ ধরে লরিটি যুক্তরাজ্যে এসেছে সেটি এখনও জানা যায় নি। তবে কারো কাছে এসংক্রান্ত তথ্য থাকলে তা কর্তৃপক্ষকে জানানোর অনুোধ করা হয়েছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন পার্লামেন্টে বলেছে, “এটি অকল্পনীয় এক মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক ঘটনা।”
তিনি জানান, ঘটনাটি কিভাবে ঘটেছে সেটি খুঁজে বের করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
ব্রিটেনের ট্রাক পরিবহন সংক্রান্ত একটি সমিতির প্রধান বলেছেন, এ ঘটনায় বোঝা যায় যে বিভিন্ন অপরাধী চক্র যেভাবে অভিবাসীদের পাচারের জন্য কনটেইনার লরিকে কাজে লাগায় - তা কতটা বিপজ্জনক হতে পারে।
ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের একজন লিবডেম সদস্য এ্যান্টনি হুক বলেছেন, যুক্তরাজ্যের উচিত ইউরোপিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে মিলে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া যাতে শরণার্থী সংকটে এরকম ভাবে মানুষের মৃত্যু না হয়।
তিনি আরো বলেন, ব্রিটেনসহ ইউরোপ জুড়ে পপুলিস্ট সরকারগুলো অভিবাসী ও শরণার্থীদের বাপারে যে কঠোর নীতি নিয়েছে - তার ফলে লোকজন মানবপাচারকারীদের খপ্পরে পড়ছে এবং প্রাণহানির ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।