গণবাণী ডট কম:
রাশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সংবিধানের আমূল পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়ার পর পুতিনের পরিকল্পনার অংশ হিসাবে রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদ ও তার সরকার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। বুধবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে এমন ঘোষণা দিলেন মেদভেদ। পুতিনের প্রস্তাব কার্যকর হলে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের হাত থেকে প্রধানমন্ত্রীর হাতে চলে যাবে। খবর : রয়টার্স ও বিবিসি।
বুধবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের হাত থেকে সংসদ ও প্রধানমন্ত্রীর উপর ন্যাস্ত করার প্রস্তাব করতে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব করেন এবং এ বিষয়ে গণভোট আয়োজনের ঘোষণা দেন।
সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারে তিনি বলেন, এর ফলে সংসদ ও রাজনৈতিক দলের ভূমিকা এবং তাৎপর্য বাড়বে। তাছাড়া এটি প্রধানমন্ত্রীর স্বাধীনতা এবং দায়িত্ব বাড়াতে ভূমিকা রাখবে। সংবিধানের এমন গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনে রাশিয়ার জনগণ প্রস্তুত বলেও উল্লেখ করেন পুতিন।
পুতিনের সংবিধান পরিবর্তনের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদ পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন। তিনি বলেন, পুতিনের সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবকে সহায়তা করার জন্যই তিনি ও তার সরকার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। প্রেসিডেন্টের প্রস্তাবের ফলে রাশিয়ার ক্ষমতার ভারসাম্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে মেদভেন পুতিনের দেওয়া প্রস্তাব অনুযায়ী রাশিয়ার জাতীয় সুরক্ষা কাউন্সিলের উপ-প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
মেদভেদের পদত্যাগের পর নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবায়ানিন, অর্থমন্ত্রী ম্যাক্সিম ওরেশকিন, জ্বালানিমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাকের নাম আলোচিত হচ্ছে। নতুন সরকার গঠিত হওয়ার আগ পর্যন্ত মেদভেদের সরকারই দায়িত্ব পালন করবে
প্রসঙ্গত, রাশিয়ার সংবিধান অনুযায়ী টানা দুই বারের বেশি প্রেসিডেন্ট থাকা যায় না। পুতিন বর্তমানে দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, যা শেষ হবে ২০২৪ সালে। এমন সময়ে পুতিনের সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব ও মেদভেদের পদত্যাগের ঘোষণাকে সমালোচকরা দেখছেন পুতিনের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় নিজেকে আরও কিছুদিন টিকিয়ে রাখার কৌশল হিসেবে। পুতিন ১৯৯৯ সাল থেকে কখনও রাষ্ট্রপতি আবার কখনও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ক্ষমতার ভাগাভাগিতে পুতিনের সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন মেদভেদ। ২০০৮-১২ সাল পর্যন্ত মেদভেদ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন পুতিন।