গণবাণী ডট কম:
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসকে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বৃহস্পতিবার এক বৈঠকের পর সংস্থাটির পক্ষ থেকে এই ঘোষণা আসে বলে বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ডা. টেড্রোস অ্যাডানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেছেন, এই ঘোষণার মূল কারণ চীনে যা হচ্ছে তা নিয়ে নয়, বরং অন্যান্য দেশেও করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে তার জন্য।’
উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, যেসব দেশের স্বাস্থ্য সেবা ততটা উন্নত নয় সেসব দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া।
এদিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭০ জন। এছাড়া সাত হাজার ৭১১ ব্যক্তি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আছেন। চীনের প্রতিটি অঞ্চলে এখন ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস।
ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, চীনের বাইরে ১৮টি দেশে করোনা ভাইরাসে ৯৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে জার্মানি, জাপান, ভিয়েতনাম এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মানুষে-মানুষে সংস্পর্শের মাধ্যমে ৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ডা. টেড্রোস এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে চীনের নেওয়া ব্যবস্থাকে অসাধারণ’ বলে প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, গত কয়েক দিনে মানুষে-মানুষে সংস্পর্শের মাধ্যমে এই ভাইরাস যেভাবে কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে তা উদ্বেগের ব্যাপার।’
এদিকে গুয়াংজু থেকে ১০০ ডিগ্রি জ্বর নিয়ে দেশে এসেছেন বাংলাদেশি এক ছাত্র। তাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে রেখে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, করোনা ভাইরাস ইস্যুতে চীনের উহানে আটকেপড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে ৩৭০ জন দেশে ফিরতে চান। আর ১৫ জন আসবেন না বলে জানিয়েছেন।
এদিকে বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী ভারতে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা। বৃহস্পতিবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ কেরালায় নভেল করোনা ভাইরাসের পরীক্ষায় এই ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায় এক শিক্ষার্থীর শরীরে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, এখন পর্যন্ত একজন বাংলাদেশি ছাত্রসহ তিনজন রোগী জ্বর ও ঠাণ্ডায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে রাজধানীতে দুজন ও খুলনা হাসপাতালে এক জন ভর্তি হন। ইতোমধ্যে তিনজন রোগীর দুজন বাড়ি ফিরে গেছেন। তাদের নমুনা পরীক্ষায় করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি মেলেনি।
গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনা ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। চীন ছাড়াও থাইল্যান্ড, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়াসহ ১৮ দেশে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত এই ভাইরাসে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশির মত সমস্যা দেখা দেয়।