গণবাণী ডট কম:
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা যেদিন রেকর্ড ছাড়ালো, সেদিনই সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে দুরকমের তথ্য দিলেন।
সোমবার সকালে রাজধানীর মহাখালীতে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার স্বাস্থ্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে জরুরি সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক জানিয়েছিলেন, দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় আরো ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন আরো ২৯ জন শনাক্ত হয়েছেন। মন্ত্রী জাহিদ মালেকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী দেশে মোট মৃতের সংখ্যা ১৩, শনাক্ত রোগী ১১৭।
এর কয়েক ঘন্টা পরে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা পূর্ব নির্ধারিত ও নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে জানান, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় আরো ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে দেশে মোট মারা গেছেন ১২ জন। অপরদিকে দেশের বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে গত ২৪ ঘন্টায় ৩৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন আরো ৩৫ জন করোনায় আক্রান্ত হিসাবে শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোটা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২৩ জন।
এ ব্রিফিংয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ।
আইইডিসিআর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা প্রথমদিকে এককভাবেই করোনাভাইরাস সংক্রান্ত প্রতিদিনকার পূর্ব নির্ধারিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আসছিলেন, পরে সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও এতে যোগ দিচ্ছিলেন।
কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সোমবার এক অনির্ধারিত অনুষ্ঠানে আকস্মিকভাবেই নতুন আক্রান্ত আর মৃতের সংখ্যা প্রকাশ করেন। মন্ত্রী বলেন, গত চব্বিশ ঘণ্টায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। তার উল্লেখ করা নতুন শনাক্ত রোগী ছিলেন ২৯ জন, এই সংখ্যাও এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
কিন্তু এর কয়েক ঘণ্টা পর নিয়মিত অনলাইন সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসে সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, গত চব্বিশ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৩ জন। নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৩৫ জন।
স্পষ্টতই দুই রকম তথ্য পাওয়া যাচ্ছে দুজনের কাছ থেকে, যদিও দুজনেই দায়িত্বশীল পদে আছেন এবং এই দুজনের যে কোন একজনের দেয়া তথ্যই এতদিন করোনাভাইরাস সংক্রান্ত গ্রহণযোগ্য তথ্য হিসেবে গণ্য করে আসা হচ্ছিল।
আইইডিসিআর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরার দেয়া হিসেব অনুযায়ী মোট রোগী ১২ জন। শনাক্ত হয়েছেন ১২৩ জন। তাঁর হিসেবে, নতুন যারা শনাক্ত হয়েছেন তার মধ্যে পুরুষ ৩০ জন, পাঁচজন মহিলা এখন পর্যন্ত যারা শনাক্ত হয়েছেন তার মধ্যে ঢাকায় ৬৪ জন, নারায়ণগঞ্জে ২৩ জন।
এর আগে সোমবার রাজধানীর মহাখালীতে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার স্বাস্থ্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে জরুরি সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক জানিয়েছিলেন,বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় আরো ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন আরো ২৯ জন শনাক্ত হয়েছেন।
এ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হলে অনলাইন ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি নানা অজুহাত দিয়ে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেন। তিনি বুঝানোর চেষ্টা করেন, পরীক্ষা চলছে, তাই পরে পরীক্ষার শনাক্ত হওয়ার সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু মৃত্যুর সংখ্যা কিভাবে কমেছে, জানতে চাইলে মহাপরিচালক দাবী করেন, নামের বানানে কাটাকুটি (ঘষামাজা) থাকার কারণে একজনকে দুই জন মনে করায় মৃত্যুর হিসাবে গড়মিল হয়েছে।