কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রিতিনিধি :
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দস্যু নারায়ণপুর গ্রামের ছোয়াঁ এগ্রো ফিড মিল লিমিটেড কারখানায় একজন শ্রমিকের করোনাভাইরাস বা কোভিড ১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার পর তার পরিবারের সদস্য ও কারখানার কর্মরত অন্যান্য শ্রমিকদের করোনাভাইরাস পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ৩ জন কর্মী শনিবার সকালে কারখানায় নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে।
গত বৃহস্পতিবার ঐ শ্রমিক মাথা ব্যাথার চিকিৎসা নিতে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকের তার অন্যান্য উপসর্গ দেখে সন্দেহ হলে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরে শুক্রবার আইইডিসিআর এর প্রকাশিত নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে এ কারখানার একজন শ্রমিকরে দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ হওয়ার খবর জানার পর উপজেলা প্রশাসন শুক্রবারই ঐ কারখানাসহ দস্যুনারায়ণপুর গ্রাম লক ডাউন ঘোষণা করে।
কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আব্দুস সালাম সরকার জানান, কারখানাটিতে কর্মকর্তা ও কর্মচারী কিছু শ্রমিক কারখানার ভিতরে থেকে কাজ করে। কিছু শ্রমিক কারখানার বাইরে শ্রীপুর ও কাপাসিয়া বিভিন্ন এলাকা থেকে গিয়ে কারখানায় কাজ করে।
তিনি জানান, শনিবার সকালে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ৩ কর্মী কারখানার অভ্যন্তরে থাকা ১৩০ জন শ্রমিকদের মধ্যে থেকে ৭৬ জনের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নাক ও মুখের সোয়াব সংগ্রহ করেছে। আজকে এগুলো ঢাকা পাঠানো হবে। আগামীকাল আবারও একইভাবে অবশিষ্ট শ্রমিকের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। তবে আজকে ওই শ্রমিকের পরিবারের তার মা, বোন ও ভাবিসহ চারজনের নমুনা সংগ্রহ করে আজকেই ঢাকায় পাঠানো হবে। শুক্রবার থেকেই উক্ত কারখানা শ্রমিকের বাড়িগো আশপাশের এলাকা লকডাউন করা হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: প্রণয় ভূষণ দাস জানান, দস্যুনারায়ণপুর গ্রামের কিছু অংশ শ্রীপুর অংশে পড়েছে এবং কিছু শ্রমিক শ্রীপুর এলাকায় বসবাস করে। আমরা তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য বলা হয়েছে।
কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, লক ডাউন করা কারখানা ও দস্যুনারায়নপুর গ্রামে পুলিশের পাহারা রয়েছে। কারখানার বাইরে থাকা শ্রমিকদের নিজ নিজ বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইন এ থাকার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য পুলিশ সদস্য ও আনসার সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: টিপু সুলতান জানান, কারখানাটিতে কর্মকর্তা ও কর্মচারী মিলিয়ে মোট ২৩৬ লোক কাজ করেন। এদের মধ্যে ১৩০ জন শ্রমিক কারখানার ভিতরে থেকে কাজ করে। বাকী আরও ১০৬ জনের মতো শ্রমিক কারখানার বাইরে শ্রীপুর ও কাপাসিয়া বিভিন্ন এলাকা থেকে গিয়ে কারখানায় কাজ করে। আজকে কারখানার ভিতরে থাকা ৭৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বাকীদের নমুনা আগামীকাল সংগ্রহ করা হবে।
তিনি আরো জানান, কারখানার আক্রান্ত যুবক এখানে সেল্স সুপারভাইজার হিসাবে কাজ করত। সে গত শনিবার থেকে ছুটিতে রয়েছে। আক্রান্ত হবার পর থেকে সে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। আজকে তার পুনরায় পরীক্ষা করা হবে।
তিনি জানান, ভিয়েতনামের ২ জন নাগরিক গত ২৮ ফেব্রুয়ারী থেকে ১৪ মার্চ এ কারখানায় চিলেন। তারা বর্তমানে সুস্থ আছেন।