গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের জেলায় করোনাভাইরাস বা কোভিড ১৯ এ শনিবার পর্যন্ত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ ও সাংবাদিকসহ মোট পজিটিভ হয়েছেন ৩৩৩ জন। তাদের মধ্যে এ পর্যন্ত মোট ২৫ জন তৃতীয় ধাপের নমুনা পরীক্ষায় নেগেটিভ ফলাফল পেয়ে করোনা জয় করে সুস্থ হয়েছেন। করোনা বিজয়ীদের মধ্যে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ ও সাংবাদিক রয়েছেন। জেলায় আক্রান্তদের মধ্যে আরো অনেকের দ্বিতীয় ধাপের নমুনা পরীক্ষায় নেগেটিভ ফলাফল পাওয়া গেছে। তাদের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল পাওয়া গেলে জেলায় সুস্থ হওয়ার সংখ্যা আরো বাড়বে।
গাজীপুর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর জেলায় করোনাভাইরাস শনাক্ত করার লক্ষে শক্রবার পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৮৪৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে জেলায় মোট করোনায় আক্রান্ত হিসাবে শনাক্ত হয়েছে ৩৩৩ জন। তাদের মধ্যে মোট সুস্থ হয়েছেন ২৫ জন (সদর বাদে)। জেলা মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ২ জন। মুলত এ ২ জন উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করার পর নমুনা পরীক্ষায় তারা পজিটিভ হয়েছেন। তাদের মধ্যে কাপাসিয়ার বাসিন্দা অসুস্থ হয়ে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন। অপরজন টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করার পর সন্দেহ হলে নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ ফলাফল আসে।
গাজীপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা মো: শাহিন জানান, সদর উপজেলায় (গাজীপুর মহানগরসহ) এ পর্যন্ত ৪৭০ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। তাদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১১৫ জন। আক্রান্তদের মধ্যে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজি বিশেষায়িত হাসপাতাল মিলিয়ে মোট ১৫ জন চিকিৎসক ও ২৭ নার্স করোনা পজিটিভ হয়েছেন। এছাড়া গাজীপুর মহানগর ও জেলা পুলিশের ৩৬ জন সদস্য করোনা পজিটিভ হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায় নেগেটিভ ফলাফল এসেছে। তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় নেগেটিভ আসলে তাদের সুস্থ ঘোষণা করা হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিবলী সাদিক জানান, কালীগঞ্জ উপজেলায় এ পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯১ জন। তাদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকসহ ৩২ জন রয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারী। কালীগঞ্জ থানার বিভিন্ন পদের পুলিশ সদস্য রয়েছেন ১৬ জন। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিসের ৪ জন কর্মচারী রয়েছেন। তিনি আরো জানান, উপজেলায় এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস শনাক্ত করার লক্ষে মোট ৪৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। কালীগঞ্জে আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১২ জন। সুস্থ হওয়াদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ১ জন এবং কালীগঞ্জ থানার পুলিশ সদস্য রয়েছেন কয়েকজন। এছাড়া আরো কয়েকজনের দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায় নেগেটিভ ফলাফল এসেছে।
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আব্দুস সালাম সরকার জানান, কাপাসিয়ায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৭০ জন। এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস শনাক্ত করার লক্ষে মোট ৫৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ ৩১ জন রয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের।
কাপাসিয়ায় আক্রান্তদের মধ্যে মোট ১৬ জন সুস্থ্য হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩ জন ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়েছেন। বাকীদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: আব্দুস সালাম সরকার নিজ বাসায় আইসোনেশনে থেকে এবং ১২ ছোয়া এগ্রো কারখানার শ্রমিক উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তত্বাবধানে কারখানার ভিতরে আইসোলেশনে থেকে সুস্থ হয়েছেন। এছাড়া আরো কয়েকজনের দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায় নেগেটিভ ফলাফল এসেছে। তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় নেগেটিভ আসলে তাদের সুস্থ ঘোষণা করা হবে।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: প্রণয় ভূষণ দাস বলেন, শ্রীপুর উপজেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ জন। এপর্যন্ত করোনাভাইরাস শনাক্ত করার লক্ষে মোট ৩১০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শ্রীপুর উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১ চিকিৎসকসহ ৪ জন রয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের। এ উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে ১ জন উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তত্বাবধানে বাড়ীতে আইসোলেশনে থেকে সুস্থ হয়েছেন। এছাড়া আরো কয়েকজনের দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায় নেগেটিভ ফলাফল এসেছে।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও প:প: কর্মকর্তা) ডা: নাজমুন নাহার জানান, কালিয়াকৈর উপজেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ জন। আক্রান্তদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ ৫ জন রয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের। কালিয়াকৈরে আক্রান্তদের মধ্যে মোট ৭ জন সুস্থ্য হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২ জন ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়েছেন এবং ৫ জন উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তত্বাবধানে বাড়ীতে আইসোলেশনে থেকে সুস্থ হয়েছেন। এছাড়া আরো কয়েকজনের দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায় নেগেটিভ ফলাফল এসেছে। এপর্যন্ত করোনাভাইরাস শনাক্ত করার লক্ষে মোট ৪৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।