গণবাণী ডট কম:
ভারতের আসামে ৩ বাংলাদেশীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে, স্থানীয় পুলিশ দাবী করেছে, তিনজন বাংলাদেশীকে গরু পাচারকারী সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের আসামের আসামের করিমগঞ্জে। স্থানীয় পুলিশের বিবৃতি অনুযায়ী, গত শনিবার মধ্যরাতে করিমগঞ্জের পাথরকান্দি অঞ্চলে বগরিজান চা বাগানে তিনজন বাংলাদেশীকে গরু পাচারকারী সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, গত শনিবার রাতে পাঁচ-ছয় জনের একটি দল এলাকায় ঢুকেছিল। স্থানীয় মানুষের সন্দেহ হয়, গরু চুরি করতেই অত রাতে ওই অঞ্চলে ঢুকেছেন ওই ব্যক্তিরা। এরপরেই তাঁদের উপর চড়াও হন স্থানীয় মানুষ। শুরু হয় মারধর। তখনই দুই-তিন জন পালিয়ে যান। বাকি তিনজন আটকে পড়েন। কারা ওই বাংলাদেশীদের পিটিয়ে হত্যা করল, সে বিষয়ে পুলিশ অবশ্য এখনও পর্যন্ত কোনও বিবৃতি দেয়নি। এফআইআর-ও করা হয়েছে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। তবে প্রশাসনের অনুমান নিহতরা সিলেটের জুরি উপজেলার জামকান্দি এলাকার বাসিন্দা।
করিমগঞ্জের পুলিশ সুপার কুমার সঞ্জীব কৃষ্ণ লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছেন, নিহত তিন ব্যক্তি যে বাংলাদেশী তা প্রমাণিত হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে বাংলাদেশের বেশ কিছু জিনিস পাওয়া গিয়েছে। সঙ্গে মিলেছে দড়ি, তার কাটার সরঞ্জাম, ব্যাগ ইত্যাদি। সীমান্ত পার করে তাঁরা গরু চুরি করতে এসেছিলেন বলেই মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের দেহ ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে প্রায় ৯২ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে করিমগঞ্জের। এর মধ্যে ৪২ কিলোমিটার নদী। বাকিটা স্থল। আসামের দিকের সীমান্ত ঘন জঙ্গল এবং চা বাগান অধ্যুষিত। বহু সময়েই হাতি সীমান্ত পারাপার করে। এ ছাড়াও ওই অঞ্চলে ভারত-বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য পথ আছে। মূলত কয়লা রপ্তানি হয় ওই পথে।
গত জুন মাসে একই ধরনের এক ঘটনা ঘটেছিল ওই অঞ্চলে। বাংলাদেশ থেকে আগত এক ৪৩ বছরের ব্যক্তিকে গরু পাচারকারী সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। ওই ব্যক্তির সঙ্গে তিনজন বাংলাদেশী এবং দুই জন ভারতীয় ছিল বলে অভিযোগ। এর আগে গত বছর অগাস্ট মাসেও এক বাংলাদেশীর মৃত্যু হয়েছিল ওই সীমান্তে। ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সঙ্গে এনকাউন্টার হয়েছিল তাঁর।
শনিবার রাতের ঘটনা যেখানে ঘটেছে, তার খুব কাছেই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর একটি ক্যাম্প আছে। কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল, কী ভাবে সীমান্ত পারাপার সম্ভব হলো, এ সব বিষয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটেছে, যখন বাংলাদেশ সর্বশেষ সমুদ্র বন্দর দিয়ে জল ও স্থল পথের ট্রান্সশিপমেন্ট দিয়ে ভারতের সাথে বন্ধুত্বের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, কুটনীতিকদের দাবী অনুযায়ী দুই দেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এখনো নিহতরা বাংলাদেশী নাগরিক কিনা এ বিষয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
খবর : ডয়চে ভেলে ও অন্যান্য সূত্র।