গণবাণী ডট কম:
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে এবারের ঈদের পর সারাদেশে কাঁচা চামড়া ক্রয়-বিক্রয় না হওয়ায় সাধারণ মানুষ ও মৌসুমী ক্রেতারা কোরবানির পশুর চামড়ার যথাযথ দাম পায়নি। বিভিন্ন মহল থেকে এমন অভিযোগের মধ্যে কাঁচা চামড়া রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ বকসী এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
বিবৃতিতে নির্ধারিত মূল্যে কোরবানির পশুর চামড়া কেনা-বেচা না হওয়ার তথ্য তুলে ধরে চামড়া ব্যবসায়ীদের দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, “উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাঁচা চামড়া রপ্তানির অনুমতি প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে কাঁচা চামড়া ক্রয়-বিক্রয় নিশ্চিত করতে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা কামনা করা হচ্ছে।”
বাংলাদেশে সারা বছর যে সংখ্যক পশু জবাই হয়, তার অর্ধেক হয় এই কোরবানির মৌসুমে। কোরবানি যারা দেন, তাদের কাছ থেকে কাঁচা চামড়া কিনে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বিক্রি করেন ট্যানারিতে। এ সময়ই সবচেয়ে বেশি চামড়া সংগ্রহ করেন ট্যানারি মালিকরা।
প্রতিবছর কোরবানির ঈদের আগে চামড়া শিল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহের জন্য ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ট্যানারি মালিকদের দাবির কারণে গত বেশ কয়েক বছর ধরে কাঁচা চামড়ার মূল্য কমতির দিকে।
এবছর ৬ আগস্ট বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে চামড়া ব্যবসায়ীদের বৈঠকে কোরবানি পশুর চমড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার মূল্য প্রতি বর্গফুট ৪৫-৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৩৫-৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া খাসির চামড়া ১৮-২০ টাকা, বকরির ১৩-১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
কিন্তু এবারও ঈদের দিন বিকালে চামড়ার দাম পড়ে গেলে ‘সিন্ডিকেটের কারসাজির’ অভিযোগ তোলেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। ব্যাপক সমালোচনার মধ্যেই রপ্তানির সিদ্ধান্ত এলো। এর আগে কাঁচা চামড়া রপ্তানি না হলেও স্থলসীমানা অতিক্রম করে ভারতে পাচারের অভিযোগ বহু পুরনো।
কাঁচা চামড়া রপ্তানির অনুমতির সিদ্ধান্ত জানিয়ে গুণাগুণ অক্ষুণ্ন রেখে যথাযথভাবে চামড়া সংরক্ষণের জন্য ব্যবসায়ী ও স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এজন্য বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে তিনভাবে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়। এগুলো হলো- প্রক্রিয়াজাতকৃত চামড়া, জুতা এবং চামড়াজাত পণ্য: যেমন হাতব্যাগ, বেল্ট ও ওয়ালেট ইত্যাদি।