গণবাণী ডট কম:
রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে কর্মচারীদের মারধরে নিহত পুশিলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুল করিম শিপনের পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাত করে সমবেদনা জানিয়েছেন ডিএমপি ও গাজীপুর জেলা পুলিশের কর্মকর্তাগণ। এসময় সন্তান হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের শাস্তি দাবী করে প্রধানমন্ত্রী ও আইজিপি’র হস্তক্ষেপ কামনা করেন নিহতের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফাইজুদ্দিন আহমেদ।
বুধবার সকালে নিহত পুশিলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুল করিম শিপনের গাজীপুর মহানগরীর বরুদার বাসায় যান ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) এর তেজগাঁও জোনের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো: হারুন অর রশিদ। তিনি সেখানে দীর্ঘসময় অবস্থান করেন এবং স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় স্বজনদের কান্না ও আহাজারিতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্বজনদের কান্নায় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাসহ অনেকের চোখ ছল ছল করে ওঠে। এসময় সন্তান হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের শাস্তি দাবী করে প্রধান মন্ত্রী ও আইজিপি’র হস্তক্ষেপ কামনা করেন নিহতের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফাইজুদ্দিন আহমেদ।
ডিএমপি’র উপ পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশিদ এএসপি আনিসুল করিম হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আশ্বাস দেন। এসময় তার সঙ্গে নিহতের ব্যাচমেট ৩১তম বিসিএস পুলিশের ৩০ জনের অধিক সহকর্মী উপস্থিত ছিলেন। আরো উপস্থিত ছিলেন কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আমানত হোসেন খান ও গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রীনা পারভীন। পরে তারা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে গিয়ে নিহতের কবরে পুষ্প স্তবক অর্পণ করেন ও কবর জিয়ারত করেন।
পরে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) এর তেজগাঁও জোনের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো: হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের জানান, ভিডিও ফুটেজ দেখে মনে হয়েছে, এটি একটি হত্যাকান্ড। আমরা এ ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেফতার করেছি। যে হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটেছে সেটির কোন লাইসেন্সে। চিকিৎসার নামে যারা মারধর করেছে, তারা কেউ ডাক্তার নয়। এরা ওয়ার্ডবয়, স্কুল কলেছের ছাত্র। আমরা চাই এ ঘটনার দৃষ্টান্তমুলক বিচার হোক, যাতে আর কোন মায়ের বুক এভাবে খালি না হয়।
এর আগে গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার নিহত এএসপি আনিসুল করিম শিপনের বাসায় যান এবং স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এসময় তার সঙ্গে গাজীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রাসেল শেখ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) জহিরুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আমিনুল ইসলামসহ পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বুধবার সকালে নিহত পুলিশের সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিম শিপনের হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের বিচারের দাবীতে সকালে জেলা প্রশাক কার্যালয়ের সামনে ও নিহতের বাসার পার্শ্ববর্তী হাড়িনাল সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এএসপি আনিসুল করিম শিপনের হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মানবন্ধনে নিহতের সহপাঠি, বন্ধু বান্ধব গাজীপুরের সর্বস্তরের মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।
মানববন্ধন কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. আমানত হোসেন খান, আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাড. আব্দুল হাদী শামীম, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর হাসান আজমল ভূইয়া, মহিলা কাউন্সিলর এ্যাড. আয়েশা আক্তার, নিহত আনিসুলের সহপাঠী রাণী বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০০০ ব্যাচের বন্ধুগণ, হাড়িনাল হাই স্কুল ব্যাচ ২০০০ এর সহপাঠীসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ।